কাশ্মীরের বাতাসে এই মুহুর্তে যুদ্ধের গন্ধ। পরিস্থিতি এমনই, যে কোনও সময়ে লেগে যেতে পারে সরাসরি যুদ্ধ৷
যুদ্ধের আবহ তৈরির পিছনে কাশ্মীর প্রশাসনের দু’টি নির্দেশিকা বড় ভূমিকা নিয়েছে৷ সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন রাজ্যের এলপিজি গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটারদের নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ২ মাসের জন্যে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার মজুত রাখতে।
এখানেই শেষ নয়৷ কাশ্মীরের কার্গিল সংলগ্ন এলাকা গান্ডারওয়াল-এর পুলিশ সুপার জারি করেছেন আর একটি নির্দেশিকা। ওই নির্দেশিকায় রাখঢাক না করেই বলা হয়েছে এলাকার ১৬টি স্কুল সেনাবাহিনীর থাকার জন্যে ব্যবহার করা হবে। তাই দ্রুত খালি করে দিতে হবে স্কুলগুলি।
গ্যাসের সিলিন্ডার মজুত করার বিষয়ে প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে, ভূমিধ্বসের কারণে জাতীয় সড়কে পণ্য পরিবহণ ব্যাহত হতে পারে। সেই কারণেই কাশ্মীরে আগামী ২ মাসের জন্য এলপিজি গ্যাস পর্যাপ্ত মজুত রাখতে বলা হয়েছে৷
সরকারের তরফে যে কারণই দেখানো হোক না কেন,স্থানীয় মানুষজনের মতে, এমন নির্দেশ দেওয়া হয় বড় ধরনের ঘটনার ঠিক আগে৷ নিজেদের
আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাঁরা নিশ্চিত, কিছুদিনের মধ্যেই বেশ বড় ধরনের কিছু ঘটতে চলেছে৷
প্রসঙ্গত, ৩৭০ ধারা রদের পর থেকে শুরু করে টানা লকডাউন, কেন্দ্র যতই শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকার কথা বলুক, কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে রাশ টানতে মোদি সরকার ব্যর্থ হয়েছে৷ মহামারি আবহে, গত ৪ মাসে ৪-৫ জন জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতাকে নিকেশ করা হলেও কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা থামানো যায়নি৷ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জেনেছেন, পাকিস্তান থেকে ভিসা পাওয়া ২৫০ কাশ্মীরি যুবক হঠাৎই উধাও হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া, পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে ভারতে ঢোকার জন্যে সীমান্তে অপেক্ষা করছে প্রায় ৪০০ জঙ্গি। সব মিলিয়ে কাশ্মীরের পরিস্থিতি ভালো নয় বলেই মনে করছে প্রশাসন৷
ওদিকে মোদি সরকার চুপ করে থাকলেও উপগ্রহ চিত্র ও সেনাসূত্র বলছে, গলওয়ান উপত্যকা ছাড়িয়ে চিনা সক্রিয়তা লাদাখের অন্যত্রও ছড়িয়েছে। চিনা সেনা জড়ো হচ্ছে গোগরার হট স্প্রিং, প্যাংগং লেক এবং দেপসাং উপত্যকায়৷ গলওয়ান উপত্যকায় চিন ফের নতুন পোস্ট নির্মাণ করছে৷ তাও ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে।
অন্যদিকে ভারতও সীমান্তে সেনা ও অস্ত্রসস্ত্র বাড়াচ্ছে। তাই ধরেই নেওয়া হচ্ছে, যুদ্ধ হতে চলেছে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে৷
তবে, একদিকে চিন, অন্যদিকে পাকিস্তান, ভারত কার সঙ্গে আগে যুদ্ধে নামবে তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু এটা ঠিক, কাশ্মীর যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে৷