কে বড় ? রাজ্যের পুরমন্ত্রী, না’কি রাজ্যের এক পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন ?
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম চুঁচুড়া পুরসভার বেআইনি নিয়োগ তালিকা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় পুরমন্ত্রীর নির্দেশকে ধর্তব্যের মধ্যেই না এনে নবনিযুক্ত ওই সব কর্মীদের দিয়েই পুরসভার কাজ করাচ্ছেন৷ এমনকী, নবনিযুক্ত এক কর্মীকে বদলিও করেছেন৷ এর অর্থ, পুরমন্ত্রী নিয়োগ তালিকাকে বেআইনি বললেও, চেয়ারপার্সন তেমন মনেই করছেন না৷
এখানেই শেষ নয়, নতুন নিয়োগ হওয়া কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা সহ অন্যান্য সরকারি প্রক্রিয়াও চেয়ারপার্সনের নির্দেশে বহাল তবিয়তে চলছে। এই ঘটনায় দলের ভিতরে ও বাইরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
পাশাপাশি প্রশ্নও উঠেছে, পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সনের এত ‘সাহস’ হতেই পারেনা৷ তাহলে কি পুরমন্ত্রীর চুঁচুড়া পুরসভার বেআইনি নিয়োগ তালিকা বাতিলের নির্দেশ পুরোপুরি সাজানো ছিলো ? নিয়োগ তালিকা বাতিল প্রসঙ্গে গৌরীকান্তবাবু বলেছেন, “ওই তালিকা বাতিলের সরকারি চিঠি আমি এখনও পাইনি”।
এদিকে, নিয়োগ বিতর্ক নিয়ে পুরসভার অন্দরে মারামারিও হয়েছে। নতুন চাকরি পাওয়া এক যুবকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরই ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর ঝণ্টু বিশ্বাস। অভিযোগ, পুরসভা ভবনের মধ্যেই ওই দু’জনের হাতাহাতি বাধে। আর তারপরেই ওই যুবককে বদলির নির্দেশ দেন প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন। তখনই নতুন বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছে, নবনিযুক্তদের নিয়োগ কি তাহলে বাতিল হয়নি ?
পুরসভার প্রাক্তণ ভাইস চেয়ারম্যান তথা প্রশাসক বোর্ডের সদস্য অমিত রায় বলেছেন, “পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেওয়ার পরেও পুরসভার বিতর্কিত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা কোন ধরনের শৃঙ্খলা? ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করানো থেকে বিল তৈরি, সবই নবনিযুক্তদের দিয়ে করানো হচ্ছে। অবৈধ চাকরির ক্ষেত্রে বদলিও হচ্ছে৷ অভিযুক্তদের পদে রেখেই পুরসভার তদন্ত চলছে৷ এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।” ওদিকে জেলার বিজেপি নেতা স্বপন পাল গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন।