মারণ ভাইরাস করোনার সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানলেন তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম কোনও বিধায়কের মৃত্যু হল।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তমোনাশ ঘোষের ব্যাপারে খারাপ কিছু নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, “চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমি জানি না তমোনাশ ঘোষ বাঁচবে কিনা।” অবশেষে তাঁর আশঙ্কাই সত্যি হল।
তমোনাশ ঘোষের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই টুইট করে শোকজ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক আন্দোলনের অন্যতম সঙ্গী তমোনাশ ঘোষের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “ফলতার তিন বারের বিধায়ক এবং ১৯৯৮ সাল থেকে দলের কোষাধ্যক্ষ আজ আমদের ছেড়ে চলে গেল। আমাদের সঙ্গে সে ৩৫ বছর ধরে ছিল। সাধারণ মানুষ ও দলের প্রতি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ছিল সে। সামাজিক নানা কাজে তাঁর অবদান রয়েছে।” তমোনাশবাবুর স্ত্রী ঝর্ণা ঘোষ, দুই মেয়ে ও পরিবার-পরিজনদেরও সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, তমোনাশ ঘোষ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। ২০০১- সালে প্রথমবার এই আসনে তৃণমূলের টিকিটে জয়লাভ করেন তিনি। তার পর থেকে টানা বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন তিনি।
বর্তমানে তমোনাশ ঘোষ ছিলেন দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান। সেই কাজেই গত মাসে দুর্গাপুর গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ফলতার তিনবারের তৃণমূল বিধায়ক। তারপর কলকাতায় ফিরে আসার পর গত ২২ মে তাঁর নমুনা পরীক্ষা হলে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তখন থেকেই তাঁর তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। তাই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরই তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তমোনাশবাবুর রক্তে সুগার ছিল মাত্রাতিরিক্ত। তা ওষুধ দিয়ে কমানো হয়। পরে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তাও কমানোর চেষ্টা করা হয়। তাঁর উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যাও ছিল। এদিকে দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনের থাকার ফলে তাঁর গলায় সংক্রমণ ঘটে। তাই সে জন্যও চিকিৎসা চলতে থাকে। কিন্তু শেষরক্ষা করা যায়নি।
তমোনাশ ঘোষের দুই মেয়েও কোভিডে সংক্রামিত হয়েছিলেন। তাঁরা অবশ্য সুস্থ হয়ে আগেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু তমোনাশবাবুকে আর ফেরানো গেলো না।































































































































