
ছোটবেলা থেকে নেপোয় মারে দই শুনেছিলাম।কোনদিন নোপোটিজম শব্দটা শুনিনি। স্বজন পোষন আর নেপোটিজম যে এক সেটা ৫-৬ বছর আগে জানলাম বলিউডের সৌজন্যে।তা বেশ শব্দ ভান্ডার বৃদ্ধি সবসময়ই ভালো।
যাই হোক এই প্রসঙ্গে অন্নপূর্না ও ঈশ্বরী পাটনীর একটা লাইন মনে পরছে।
প্রণমিয়া পাটনী কহিছে জোড় হাতে।
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।।
একজন মানুষ তার পরিবারের, তার কাছের লোককে ভালোবাসবে তার ভালো চাইবে,নিজের ক্ষমতা থাকলে তাকে সাহায্য করবে এটাতো আর নতুন নয়।খুব স্বাভাবিক।যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে আর হবেও।আর এতো দোষের কি আছে?
এই স্বজন পোষন বা নোপোটিজম সব পেশাতেই আছে আর থাকবেও।
একজন ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার,উকিল,ব্যবসায়ি বা রাজনীতিবিদের পরিবারের সন্তানরা একি পেশায় আসে এবং এটা খুব স্বাভাবিক ভাবেই সমাজ মেনে নেয়।তাহলে সিনেমার জগতের বেলায় এতো রে রে করে ওঠা কেনো?
আচ্ছা একবার ভাবুন,ধীরুভাই আম্বানি নিজের কোম্পানির ভবিষ্যতের চেয়ারপার্সন কে হবে একটা ইন্টারভিউ ডেকে ঠিক করছে।কারন মুকেশ বা অনিল আম্বানিকে দেওয়া যাবে না।দিলেইতো নেপোটিজম।
রাহুল গান্ধী,অভিষেক ব্যানার্জী বা অখিলেশ যাদবরা কেন রাজনীতিতে আসবে।কই সে বেলায়তো কোন প্রশ্ন ওঠে না।
আচ্ছা ছাড়ুন এস.ডি.বর্মনের ছেলে রাহুল দেব বর্মন।ওনাকেও বাবার মতো সঙ্গীত জগতেই আসতে হলো।ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
এসব নেপোটিজম করে করেই সব শেষ।নতুনরা জায়গাই পাচ্ছেনা।নতুন ছেলে মেয়েরা কি করবে।
এবার আসি চলচ্চিত্র জগতে।
আচ্ছা আপনি যখন আমীর খানের অভিনীত থ্রি ইডিয়টস্,লগান দেখেন তখন কি ভাবেন তাহির হুসেনের ছেলেকে দেখছেন বা সলমান খানের ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া বা হাম আপকে হ্যায় কৌন দেখছিলেন একবারো ভেবেছেন এটা সেলিম খানের ছেলে?
বা যখন রনবীর কাপুরের বরফি,রকস্টার বা সঞ্জু দেখেন তখন ভাবতে বসেন এটা ঋষি কাপুরের ছেলের অভিনীত সিনেমা দেখছি?
কহোনা প্যায়ার হ্যায়,জিন্দেগী মিলেগী না দোবারা,দিল চাহাতা হ্যায়,রাজি,বদলাপুর দেখার সময় ভেবেছিলেন কে কার ছেলেমেয়ে।
আদিত্য চোপড়ার পরিচানায় দীলবালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে বা করন যোহরের পরিচালনায় কুছ কুছ হোতা হ্যায় দেখার সময় সত্যি বলুনতো একবারো ভেবেছিলেন এরা কার ছেলেমেয়ে?বা আমাদের প্রসেনজিৎের সিনেমা দেখার সময় আপনার মাথায় একবারো আসে ও বিশ্বজিতের ছেলে।
এতোগেলো সাফল্যের পরিসংখ্যান। ব্যর্থতা কি কম আছে।
তুষার কাপুর,মিমো চক্রবর্তী,কুমার গৌরভ,সুনীল আনন্দ,ফরদিন খান,জায়েদ খান,ঋষা দেওয়ল আরো অনেক।
তাই এই বিয়য়গুলো সব পেশাতেই ছিল আছে আর থাকবে।সলমান খান তোর বোনের বড় বা ভাইদের সাহায্য করবে বা করন যোহর স্টার কীডদের লঞ্চ করবে তাতে নাকে কাদার কি আছে?
একটা পেশা বলুন যেখানে প্রতিযোগিতা নেই।এমন একটা পেশা বলুন যেখানে একজন আর একজনের কাছ থেকে কাজ ছিনিয়ে নিতে চায়না।
তবু এরি মাঝে কোন এক অমিতাভ বচ্চন আসবে।আর যার প্রথম সাতটা সিনেমা ফ্লপ হওয়ার পরেও ইন্ডাস্ট্রিতে শাহেনশা হবে।
কোন এক শাহরুখ খান আসবে ছোট পর্দায় অভিনয় করতে করতে বড় পর্দায় আর্বিভাব করেই বাদশা হয়ে উঠবে।
এরি মাঝে ইরফান খান আমাদের ইরফান ভাই হয়ে ওঠে।আয়ুষ্মান খুরানা আর নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিকে কখন ভালোবেসে ফেলি নিজেরাই বুঝতে পারিনা।
কোন এক ছোট গ্রামের অরিজিৎ সিংকে সলমান খান না গাওয়ালেও সে বলিউডের এক নম্বর গায়ক হয়।
এটা বোঝার চেষ্টা করুন সাফল্য পেতে গেলে আর তাকে ধরে রাখতে গেলে প্রতিভা,পরিশ্রম আর অধ্যাবসায় দরকার পরে।আপনার বংশ পরিচয় খুব বেশি হলে আপনাকে প্রথম সুযোগটা করে দেবে।তারপর লড়াইতে আপনি একা।
আর একটা কথা সুশান্ত মারা গেছে এটা সত্যি দুঃখজনক ঘটনা।তাই বলে তাকে কেন্দ্র করে এই সস্তার পাবলিসিটি বন্ধ করুন।
এই যে বয়কট বয়কট খেলা খেলেছেন সত্যি যদি বয়কট হয় কী হবে ভেবে দেখেছেন একবারো?
যশ রাজ,ধর্মা বা এস.কে.এফ প্রোডাকশন যখন একটা সিনেমা তৈরি করে তাতে কতজন কলাকুশলী জড়িত থাকে।আপনার এই হুজুগের জন্য কতজন পথে এসে বসতে পারে?
ভেবেছেন কোনদিন এর ফলে কতজন মানুষ ডিপ্রেশনে চলে যেতে পারে কাজ হারিয়ে।
সুশান্তের হাতে যথেষ্ট টাকা ছিল।দুটো সিনেমা ছিল।এই ছোট কলাকুশলীদের তো কিছুই নেই।
না না আপনার ভাবতে হবে না।আপনার কীসের দায়।
একটু বড় হয়ে শুনেছিলাম মিডিয়া ট্রায়াল।
আর এখন চলছে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল।
চলুক চলুক।একজন সুশান্ত মারা গেলে খবর হবে।একটা লাইটম্যান মারা গেলে কার কী যায় আসবে।