একদিকে আনলক ফেজ ওয়ান পর্ব। অন্যদিকে করোনা সংক্রমণের হুহু করে বৃদ্ধি। এর মাঝ আজ শুরু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। দুদিনের এই বৈঠকের দু’দফায় আলোচনা সারবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সব আলোচনার কেন্দ্রে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তা হিসেবে না রাখা বিষয়টি। সোমবার নবান্নের হাতে বক্তা হিসেবে যে তালিকা এসেছে তাতে মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেই। এই অবস্থা দেখার বিষয় মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের থাকবেন না তার প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কোনও আধিকারিক থাকবেন। এই সম্ভাবনা কিন্তু জোরালো হচ্ছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ষষ্ঠবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। সব মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেক বৈঠকে বলার সুযোগ পান না। যারা সুযোগ পান না তাদের প্রধানমন্ত্রী চিঠি লিখে মতামত জানাতে অনুরোধ করেন। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না। বুধবার আলোচনার দ্বিতীয় দিনে বলবে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক পাশাপাশি বিহার ও উত্তরপ্রদেশ। প্রথম তিনটি রাজ্যে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী ওই রাজ্যগুলি থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ফিরেছেন। আর পরের দুটি রাজ্যে সব থেকে বেশি পরিযায়ীরা ফিরেছেন। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে মঙ্গলবার একমাত্র বিরোধী দলের সরকার রয়েছে এমন একটি মাত্র রাজ্যকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেটি হল পাঞ্জাব। আর দ্বিতীয় দিনেও বিরোধী শিবিরের একটি রাজ্য, মহারাষ্ট্র। বাকি সবই বিজেপি শাসিত রাজ্য। স্বভাবতই প্রশ্ন, বিরোধী শিবিরের অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চাইছেন না মোদি? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি হওয়া মানেই বেশ কিছু অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া। সেই কারণেই কী তাঁকে এড়িয়ে যাওয়া?
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলছেন, ওনাকে সুযোগ দিয়ে লাভ কী? বৈঠকটা ভাষণ দেওয়ার জায়গা নয়। এর আগেও বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উনি যাননি। ফলে বৈঠকের গুরুত্ব নিয়ে ওর কথা শোনার কোনও অর্থ নেই। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, বলতে না দেওয়া সঠিক কাজ নয়। রাজ্য কোথায় ব্যর্থ হয়েছে সেটাও যেমন তুলে ধরা দরকার, সেই রকম কেন্দ্রীয় সরকার কোথায় ভুল করছে বা রাজ্যের মানসিকতা বুঝতে কোথায় অসুবিধা হচ্ছে সে নিয়েও আলোচনার দরকার আছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বললেন, রাজ্যের কোনও দাবি তো মানছেই না! কেন্দ্র বারবার বৈঠক করেও কোনও সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। এখন কোন রাজ্য কথা বলবে সেটাও আলোচনা করে ঠিক হচ্ছে। আর কী দরকার বৈঠক করার!