বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর উঠে আসছে একাধিক তথ্য। চলতি বছর নভেম্বর মাসে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল প্রয়াত অভিনেতার। কিন্তু মনোমালিন্যের জেরে ফোন ধরা বা যোগাযোগ রাখা বন্ধ করে দেন অভিনেত্রী বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। মানসিক অবসাদ সহ বান্ধবীর এই আচরণ মেনে নিতে পারছিলেন না সুশান্ত সিং রাজপুত। একরাশ অভিমান নিয়ে আত্মঘাতী হলেন অভিনেতা। সোমবার বিকেলে মুম্বইয়ে তাঁর শেষকৃত্য হবে।
অন্যদিকে, সুশান্ত সিং রাজপুতের ফোনের উত্তর না দিলেও নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে একের পর এক পোস্ট করে গিয়েছেন রিয়া চক্রবর্তী। মায়ের পিৎজ্জা বানানোর ছবি থেকে নিজের প্রমোশনাল ছবি। বন্ধুকে কার্যত অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ ছিলেন রিয়া। শুধু তাই নয়, সুশান্তের মৃত্যুর খবর সামনে আসার পরেও ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে স্টোরি শেয়ার করেছেন তিনি। স্পষ্টতই, সুশান্ত সিং রাজপুতের স্বভাবের সঙ্গে কোনও মিল ছিল না বাঙালি অভিনেত্রীর।
বাড়ির পরিচারক এবং রাঁধুনিকে জিজ্ঞাসবাদের পর একাধিক তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। জানা গিয়েছে, লকডাউনের শুরু থেকেই বান্ধবী ছিলেন তাঁর বাড়িতেই। কিছুদিন আগে তাঁর বান্ধবী বান্দ্রার ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। দুজনের মধ্যে শুরু হয় মনোমালিন্য। এমনকী সুশান্তের ফোনের উত্তর দিচ্ছিলেন না তিনি। মৃত্যুর আগে শনিবার গভীর রাতে ফোন করেন। ওইদিন রাতে সুশান্ত ফোন করেছিলেন বন্ধু মহেশ শেট্টিকে। ফোন ধরেননি তিনি। এরপর রবিবার বেলার দিকে যখন মহেশ শেট্টি সুশান্তকে ফোন করেন, ততক্ষণে সম্ভবত সব শেষ হয়ে গিয়েছে। সুশান্তের আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হবে। রিয়ার পাশাপাশি অভিনেতা মহেশ শেট্টিরও বয়ান রেকর্ড করবে পুলিশ।
গত ছ’মাস ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অভিনেতা। চলছিল তাঁর চিকিৎসাও। সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে ওষুধ খাচ্ছিলেন না তিনি। তাঁর ব্যবহারেও বেশ পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছিল বলে সুশান্তের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন। বান্দ্রার ওই ফ্ল্যাটেই দেখা করতে যান তাঁর বোন। সেসময় বোনকে জানিয়েছিলেন ভালো নেই তিনি। রবিবার শেষমেষ মৃত্যুর পথ বেছে নিলেন বলিউডের তরুণ অভিনেতা।
ইতিমধ্যেই হাতে এসেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা হয়েছে। একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে কোনও মাদক মেলেনি অভিনেতার শরীরে। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তদন্ত করে পুলিশ জানিয়েছে, বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েননি অভিনেতা। তাঁর ফোনের লক খোলার চেষ্টা করছে পুলিশ। স্পষ্টতই, ফোনের লক খুলতে পারলে আরও বেশ কিছু তথ্য উঠে আসবে। সোমবার দুপুরে বান্দ্রার ফ্ল্যাটে পৌঁছেছে ফরেনসিক টিম। যে ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন, সেই ঘর সহ অন্যান্য জায়গা খতিয়ে দেখছে তারা।