মুম্বইয়ে ‘পবিত্র রিস্তা’র সেটে ওঁদের দেখে একবারও মনে হয়নি এই সম্পর্ক কোনওদিন অতীত হয়ে যাবে।
একতা কাপুরের হিট সোপগুলির অন্যতম এই মেগার প্রমোশনে বিশেষ সাংবাদিক সভা। সেখানে হাজির কলকাতার আরও অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে আমিও।
মনে পড়ছে অঙ্কিতা তখন জ্বরে ভুগছেন আর সুশান্ত তাঁকে একেবারে আগলে ধরে বসে আছেন। একেবারে মাখো মাখো সেই অফ স্ক্রিন প্রেমছবি আজও যেন জীবন্ত মনে হয়। তখনই একটা বিষয় খুব চোখ টেনেছিল। দুজনের আচরণগত পার্থক্য। সুশান্ত প্রেমী, কিন্তু লাজুক। উল্টোদিকে অঙ্কিতা যেন অনেকটাই তাঁর প্রেম-প্রদর্শনে উদগ্রীব।
প্রথম ছবিতেই নিজস্বতা চেনান সুশান্ত। একজন শিক্ষিত, বোধ ও চেতনাসম্পন্ন অভিনেতা পায় বলিউড। তারপর কিছু উত্থান, কিছ পতন। বিনোদন দুনিয়ার ইতিহাসে যা নতুন কিছু নয়।
মায়ের অসময়ে মৃত্যু, অঙ্কিতার সঙ্গে ব্রেকআপ এগুলো কি কোথাও নিরাপত্তাবোধের অভাব ঘটিয়েছিল ? কোনও বিভ্রান্তি ? চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে অসামঞ্জস্য ?
বিনোদন দুনিয়ায় আয়-ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষার একটা পৃথক ব্যাকরণ আছে, যেটা এর বাইরের জগৎটা থেকে অনেকটাই আলাদা। যেমন কঠিন, তেমনই নিষ্ঠুর এক বাতাবরণ ঘিরে ধরে আর্থিক সক্ষমতা পর্যাপ্ত না থাকলে। স্বপ্ন, উচ্চাকাঙ্ক্ষা , প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির সঙ্গে যখন নেপোটিজম, লবি বাজি মিশে যায়, তখন লড়াইটা কত কঠিন হয়ে পড়ে, যে জানে, সে জানে। এ ব্যাপারে শত্রুতা করতে কেউ কম যায় না। আজ যাঁরা সুশান্তর আত্মহত্যায় কেঁদে ভাসাচ্ছেন, তাঁদের কে কি চিত্রনাট্য লিখেছেন তাঁর পর্দার পিছনের জীবনে, তা আর জানা যাবে না।
আকাশের দিকে মাঝে মাঝেই চোখ রাখতো যে তরুণ, তাঁর জন্য কোথাও তো এক ঠিকানাহীন হয়ে যাওয়ার কাহিনী লেখা হচ্ছিল অজান্তেই।
চরাচর জুড়ে একটা বিষন্ন বলয় তৈরি হচ্ছিল।
মন খারাপের ভিজে বাতাস উড়িয়ে দিচ্ছিল স্মৃতিদের।
সম্পর্কগুলো কিছুতেই আশ্রয় দিতে পারছিল না।
আসলে, এইসবই আমরাও জানি।
আমরাও অবসাদের বন্ধ দরজায় মাথা ঠুকি।
আমরাও হতাশার অন্ধকারে নিমগ্ন হই।
কতবার যে ফিরি আত্মহত্যার মুহূর্তটুকু থেকে !
কেমন করে ফিরি জানি না।
এর সত্যিই কোনও ব্যাখ্যা নেই।
কোনওদিন হয়তো ফিরবো না, সুশান্তর মতোই।
খুব কাছের লোকটাও জানতে পারবে না।
জানতে পারেনি সুশান্তর কথা।
আরও কতজনের !! ?































































































































