এবার তৃণমূল সাংসদের বাড়িয়ে দেওয়া বলে অবলীলায় রাজ্যের গোলে বল পাঠালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়৷
রাজ্য- রাজ্যপাল বিরোধ নতুন নয়৷ প্রায় সব ইস্যুতেই নিয়ম করে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন রাজ্যপাল৷ আর এবার সুযোগ করে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র৷ সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই শনিবার রাজ্যকে বিঁধলেন রাজ্যপাল ৷ মহুয়া মৈত্র’র বক্তব্যকে উল্লেখ করেই এদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন রাজ্যপাল।
সম্প্রতি নদিয়া জেলায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজের ব্যর্থতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিতর্কিত ভিডিও পোস্ট করেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তৃণমূলের তরফে থেকে মহুয়া মৈত্র এই আচরণে ক্ষোভও প্রকাশ করা হয়েছে৷ তৃণমূলের অন্দরে প্রশ্ন ওঠে, কেন মহুয়া মৈত্র তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজের ব্যর্থতা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে তুলে ধরলেন ?
আর এই ঘটনাকেই সামনে এনে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যপাল৷
পাশাপাশি মহুয়া মৈত্র একটি টুইটেও বলেন, “রাজ্য সরকার যেখানে করোনা, পরিযায়ী শ্রমিক এবং আমফানের মত দুর্যোগ একসঙ্গে সামলাচ্ছে, সেখানে রাজ্যপাল বিজেপির শেখানো বুলি আওড়াচ্ছেন।”
তৃণমূল সাংসদের টুইটের প্রেক্ষিতেই মহুয়া মৈত্র এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে উত্তর দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শনিবার
পাল্টা টুইটে তিনি বলেছেন,
” @MahuaMoitra তাঁর নিজের সরকারের বিরুদ্ধে যে ধারালো তীরগুলি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছুঁড়েছিলেন, সেগুলি ঘাতক ছিল। যা আমাদের পঞ্চায়েতের পুকুর চুরি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে কাট মানি’র কথা আবার মনে করিয়েছে। যা সর্বত্র বিরাজমান৷ পঞ্চায়েতের দুর্নীতি সামনে এনে নিজে এখন বেকায়দায় পড়েছেন।আপাদমস্তক চুরি দুর্নীতিতে ডুবে থাকা পঞ্চায়েতের চুরি সকলের নজরে এনে এবার MB এর অনুগ্রহ পেতে চাইছেন। রাজ্যপালকে আক্রমণ কি সেজন্য??? তবে এমন অসহায় অবস্থায় আপনি একা নন, আপনার মতো যোগ্য নেতা-নেত্রীদের বন্দিদশা দেখে অবাক হই”৷
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র’র বক্তব্যে ‘খুশি’ হয়ে পাল্টা টুইটে শনিবার রাজ্যপাল বলেছেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যপাল মহোদয় মহুয়া মৈত্রের বক্তব্য উদ্ধৃত করেই তৃণমূলকে আক্রমন করেছেন৷ মহুয়ার মন্তব্যে শাসক দল বিনা কারনে বেশ অস্বস্তিতেই পড়েছে।
প্রসঙ্গত, সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেছিলেন “প্রতিবছর প্রতিটি পঞ্চায়েত ১ কোটির বেশি টাকা পায়। চতুর্দশ অর্থ কমিশন থেকে এই টাকা পেয়ে থাকে পঞ্চায়েতগুলি। ৫ বছরে প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৬ কোটিও হয়ে যায়। তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০ শতাংশ অর্থ খরচের নিয়ম থাকলেও, তাঁর কৃষ্ণনগর লোকসভা এলাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয়নি। কিন্তু এলাকার ৯০ শতাংশ পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে। তিনি বলেছিলেন, এই টাকা যদি পরিকল্পনা করে খরচ করা যায়, তাহলে গ্রামে কাঁচা রাস্তা আর একটিও থাকবে না। ”
মহুয়ার এই বার্তাকে সামনে এনেই এদিন তোপ দেগেছেন রাজ্যপাল, যা তৃণমূলের পক্ষে আদৌ স্বস্তিদায়ক নয়৷