করোনাভাইরাস এখনও পর্যন্ত নতুন অনেককিছু দিয়েছে৷ তবু বোধহয় বাকি ছিলো এটাই৷
করোনায় মৃত্যু হলে শেষকৃত্যের সমস্যা ভয়ঙ্করভাবে দেখা দিয়েছে৷ মরদেহের ত্রিসীমানায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না পুত্রকন্যা, আত্মীয়স্বজনদের৷ মরদেহের কাছে ঘেঁষার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন না স্বজনরাও৷ মৃতদেহ নিয়ে শ্মশানে বা কবরস্থানে যাওয়া বা মুখাগ্নি বা কবরস্থ করার কাজ চেপেছে প্রশাসনের উপর৷ প্রায় সব ক্ষেত্রেই স্বজনরা শেষ দেখাও দেখতে পারছেন না৷
এই সমস্যা সমাধানে
এক অ্যাপ নিয়ে এসেছে পুনের একটি ‘স্টার্ট আপ’ সংস্থা। এই অ্যাপ ব্যবহার করলে মৃতের পরিবারের কাজ শুধু একটাই। অ্যাপ ডাউনলোড করে ডেথ সার্টিফিকেট পোস্ট করে দেওয়া। কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাসপাতালে কিংবা বাড়ির সামনে হাজির হয়ে যাবে বিশেষ বাহিনী। সঙ্গে খাটিয়া, ফুলের মালা, ধূপ, আতর থেকে শুরু করে শববাহী যান। শ্মশানে যেতে না চাইলেও আপত্তি নেই। সেখানেও যাবতীয় আচারের কাজ সামলে দেবে ‘অ্যাপ-বাহিনী’। এমনকী শ্রাদ্ধশান্তির ভারও তুলে নেবে তারা। পুরোহিত, বাজারহাট, খাওয়ানো, সব দায়িত্বই তাদের৷
তবে একটা কথা। তাঁরা কিন্তু স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন না৷ মোটা টাকা দিয়েই সারতে হবে শেষকৃত্য। এটি পুরোপুরি বাণিজ্যিক ‘অ্যাপ’। যার প্রতীকী নাম ‘মোকসা সেবা’।
দেশজুড়ে বাড়ছে করোনায় মৃতের তালিকাও। এখনও পর্যন্ত সংক্রমণ ও মৃত্যুর নিরিখে মহারাষ্ট্র শীর্ষে। দীর্ঘায়িত হচ্ছে মৃত্যুমিছিল৷ ঘোর সমস্যা দেখা দিচ্ছে মৃতদেহ সৎকারে। মূলত, এই সমস্যার মোকাবিলা করতেই ‘মোকসা সেবা’ অ্যাপ চালু করেছে ‘গুরুজি অন ডিমান্ড’ নামে একটি সংস্থা। জুন মাস থেকেই পুরোদমে সৎকার, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার যাবতীয় কাজ শুরু করে দেবে তারা। সংস্থার তরফে প্রণব চাওয়াড়ে বলেছেন, ‘করোনা মহামারি সবকিছুই লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। এই মারণ ভাইরাসে কারও মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে চূড়ান্ত নাজেহাল হতে হচ্ছে। সৎকারে লোক পাওয়া যাচ্ছে না। অ্যাম্বুলেন্স মিলছে না। তার উপর লকডাউনের জেরে শেষযাত্রার প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করাও সম্ভব হচ্ছে না। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতেই আমাদের ‘মোকসা সেবা’।”
আপাতত এই পরিষেবা মিলবে পুনে, পিম্পরি, চিনচাওয়াড় সহ একাধিক এলাকায়। প্রণব চাওয়াড়ে বলেছেন, এর মধ্যেই ৬৫০ জন পুরোহিত ‘মোকসা সেবা’-য় নাম নথিভুক্ত করেছেন৷