কিছুটা ছন্দে ফিরলেও, সরকারিভাবে এখনও লকডাউন চলছে৷ করোনার জেরে দেশজুড়েই ছিলো কড়া লকডাউন৷ এখন শুধুমাত্র কনটেইনমেন্ট জোন গুলিতে লকডাউনের নির্দেশ। লকডাউনের ফলে দুশ্চিন্তায় সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী। এতে ঘুম উড়েছে অনেকেরই।
প্রায় ৭১ দিন ধরে চলছে লকডাউন। ঘুমের সমস্যা দেখা দিয়েছে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই। কেউ হয়তো জেগে রয়েছেন দিনের পর দিন, আবার কেউ দিনে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন। এই সময় সবচেয়ে বেশি ফোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাই পেয়েছেন।
কী কারণে এত ফোন তাঁদের কাছে?
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা অনেকেই জানাচ্ছেন, লকডাউনের জেরে জীবিকা হারানোর ভয়, প্রাক-লকডাউন সময়কার রুটিন বাঁধা জীবনযাপনে ছেদ, আচমকাই বেড়ে যাওয়া মোবাইল ল্যাপটপের স্ক্রিনটাইম, এমন নানা কারণ রয়েছে পিছনে।
এক নামী ম্যাট্রেস প্রস্তুতকারক সংস্থা সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছে দেশের নাগরিকদের ঘুমের সময় সীমার উপর। দেখা গিয়েছে, ২৫ মার্চের আগে দিনে ৬ ঘণ্টারও কম ঘুমানো মানুষ যেখানে ছিলেন ২৬ শতাংশের আশেপাশে, সেখানে দু’মাসের লকডাউনের পর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ শতাংশ।
কলকাতার বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জয়রঞ্জন রাম বলছেন, ‘একদিকে করোনায় নিজে ও পরিজনের আক্রান্ত হওয়ার ভয় অন্যদিকে রোজগার হারানোর চিন্তা। দুইয়ে মিলে অনেকেই উদ্বেগের শিকার যার ফল পড়েছে ঘুমের ওপর।’
এছাড়াও রয়েছে, ওয়ার্ক ফ্রম হোমের কারণে কাজে যাওয়া বা বাড়ি থেকে বেরোনোর তারা না থাকায় জীবন থেকে অনেকের আগেকার রুটিন হারিয়েছে। বিছানাটাই এখন অনেক মানুষের কাছে সোফা বা চেয়ার। ফলে বিছানার প্রতি আকর্ষণটা কমেছে।
অন্য এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রাজর্ষি নিয়োগী বলছেন, ‘বাইরে বেরিয়ে লোকজনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ এখন নেই। মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি স্ক্রিনেই চোখ রেখে সময় কাটাচ্ছেন মানুষ। ফলে অনেকের ঘুমের ধরনে প্রভাব পড়ছে।’ অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘ একদিকে উদ্বেগ- উৎকণ্ঠার জেরে ঘুম ঠিকমতো হচ্ছে না , ওদিকে ঘুম না হওয়ায় সারাদিনের ক্লান্তি মেজাজ খিটখিটে করে দিচ্ছে, যার জেরে উদ্বেগ বাড়ছে।’
এখন কী উপায়?
মনোবিদ সহেলি গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘ নির্দিষ্ট সময় স্নান, খাওয়ার অভ্যাস বজায় রাখতে হবে। work-from-home-এও টেবিল চেয়ারে বসে অফিসের পোশাকে কাজ করার চেষ্টা করুন। নিয়মিত মেডিটেশন করুন সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
অন্য আর এক মনোবিদের পরামর্শ, ‘ ঘুম ভাঙলেই বিছানা ছাড়ুন। রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যেতে চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে ঘুমোনোর আগে স্নান সেরে হাল্কা গান চালিয়ে দিন। মোবাইল ল্যাপটপের চোখ রাখার বদলে ঘুমোতে যাওয়ার আগে বই পড়ুন। এবং অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।’































































































































