নদিয়া জেলা তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এলো৷ দলের সাংসদ ও সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে একযোগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জেলার প্রায় সব নেতা৷ এই নেতারা প্রথম দিন থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত এবং এই নেতাদের হাত ধরেই নদিয়া জেলায় শক্তিশালী হয়েছে দল৷
সম্প্রতি জেলার একাধিক ব্লক সভাপতি পরিবর্তনের পাশাপাশি নতুন জেলা কমিটি তৈরি করেছেন মহুয়া৷ এই বদল করার বিষয়টি সামনে আসার পরই দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মধ্যে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের আদি নেতারা এই ঘটনার পর অসন্তোষ চেপে রাখেননি। অভিযোগ, জেলা কমিটিতে সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মহুয়া মৈত্র যাঁদের এনেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই আর রাজনীতি করেন না৷ অনেকে অন্য দলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন৷ এমনই দাবি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশের। তেহট্টের বিধায়ক তথা অবিভক্ত জেলা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, রাজ্যের কারামন্ত্রী তথা কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক তথা অবিভক্ত জেলা কমিটির প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি কল্লোল খাঁ, রুকবানুর রহমান দলের রাজ্য সভাপতি ও মহাসচিবকে ফোন করে তাঁদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, “কমিটি বদলের মতো এত বড় একটা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, অথচ তাঁদের কিছুই জানানো হয়নি।” নদিয়া জেলা তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা-কর্মীর বক্তব্য,”গৌরী দত্ত, উজ্জ্বল বিশ্বাস, কল্লোল খাঁ-দের নেতৃত্বেই সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতায় এসেছি। এই নেতারাই এতদিন আমাদের আগলে রেখেছিলেন। এখন তাঁদের এ ভাবে অপমান মেনে নেওয়া সম্ভব নয়৷ যতদূর যেতে হয় আমরা যাবো”৷
তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রথম দিন থেকেই কল্লোল খাঁ, গৌরী দত্ত, উজ্জ্বল বিশ্বাস, রুকবানুর রহমানদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক তৈরি করেছেন মহুয়া। এর আগেও চাপড়ার ব্লক যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বদল নিয়ে রুকবানুরের সঙ্গে মহুয়ার বিবাদ চরমে উঠেছিলো৷ বিবাদ হয় তেহট্টের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তর সঙ্গেও। ব্লক নেতৃত্বে পরিবর্তন করতে গিয়ে কল্লোলের সঙ্গেও মহুয়া বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। জেলার সিনিয়র নেতাদের অভিযোগ, জেলা কমিটি তৈরি হলেও পুরনো নেতাদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করা হয়নি৷ একথাই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জানানো হয়েছে। গৌরীশঙ্কর, কল্লোল বলেছেন, “আমাদের অসন্তোষের কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছি।”