সিইএসসির পাল্টা বিদ্যুৎ কোম্পানি গড়তে যেতেই লাঞ্ছিত প্রসূনরা

0
1

পশ্চিমবঙ্গে আরেকটি বিদ্যুৎ সংস্থা করার ইচ্ছে ছিল তাঁদের।

বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত।
বক্তব্য ছিল: মানুষ দাম ও পরিষেবা দেখে বেছে নিতে পারবেন কার কাছ থেকে বিদ্যুৎ নেবেন।

এই পরিকল্পনা সামনে আসার পরেই নানাভাবে বিরোধিতার মুখে পড়ে লাঞ্ছিত হয় দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী সালিমরা এবং ইউনিভার্সাল সাকসেসের কর্ণধার প্রসূন মুখোপাধ্যায়।

রহস্যজনকভাবে একাধিক রাজনৈতিক দল ও মিডিয়ার একাংশ নানা অপপ্রচার করে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা ছড়িয়ে তাঁদের দমিয়ে দেয়।

যেহেতু এই গোষ্ঠীর জাকার্তায় নিজস্ব কয়লাখনির ব্যবসা ও জাহাজ পরিবহন ছিল; এরা ভেবেছিল আমদানিকৃত কয়লা দিয়ে তুলনামূলক কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। পূর্ব মেদিনীপুরে এই প্রকল্পের ভাবনা হয়েছিল। এখানকার খনি থেকে কয়লা লাগত তুলনায় কম।

প্রসূনবাবুর সৌজন্যে বেশ কিছু বড় প্রকল্প বামজমানায় বঙ্গমুখী হয়েছিল। কিন্তু বামফ্রন্টের মধ্যে থেকে বিরোধিতা ওঠে। বামবিরোধী দলের থেকেও বিরোধিতা আসে।

বিশেষভাবে বিদ্যুৎব্যবসার কথা সামনে আসতেই বাধা বাড়ে। জমি, পরিবেশ ইত্যাদি ইস্যুতে তাদের আটকে দেওয়া হয়। এমনকি সরকারি আমলাকাঠামোর একটা অংশও তাদের পিছনে উঠেপড়ে লাগে। তাদের সমস্ত প্রকল্পে জটিলতা বাড়ানো হয়।

অথচ তারাই বিরল গোষ্ঠী যারা সরকারের কাছ থেকে যৌথ উদ্যোগের নামে বিনামূল্যে বা সস্তায় জমি না নিয়ে বিপুল টাকা দিয়ে জমি কিনেছিল। ভগবানের কথা বলা মিডিয়াও তাদের পিছনে লাগে কারণ এক ‘বেওসায়ী’ গোষ্ঠী ভগবানকে পুজো দিত!!!

শেষ পর্যন্ত সর্বাত্মক বাধায় পড়ে খেই হারিয়ে বাংলা থেকে নিজেদের কার্যত গুটিয়ে নেয় সালিমগোষ্ঠী ও প্রসূনের ইউ এস ই।

এখন, যখন প্রশ্ন উঠছে কেন বিদ্যুতে মনোপলি চলবে, তখন সুদূর সিঙ্গাপুরে বসে প্রসূনের মন্তব্য,” সবই দেখছি। শুনছি। পুরনো কথা তুলতে চাই না। শুধু বাংলার ছেলে হিসেবে চেয়েছিলাম সস্তায় বিদ্যুৎ দেবে আর মানুষ পছন্দ করে নিতে পারবেন, এমন একটা সংস্থা হোক। হলে বাংলার উপকারই হত। কিন্তু এসব করতে গিয়ে যা অভিজ্ঞতা হল, তা দুঃখের। এর বেশি এসব আর না ভাবাই ভালো।”

প্রসূনরা চেয়েছিলেন, হলদিয়া বা নয়াচক কেন্দ্রিক একটি বন্দর পরিষেবা। রেললাইন প্রসারণের কথাও চলছিল। অন্যান্য শিল্পের সঙ্গে একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হত। বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিপণনে প্রতিযোগিতা আনতে চেয়েছিলেন তাঁরা।

কিন্তু কোনো এক ভয়ানক শক্তিশালী লবির চাপে একেবারে প্রাথমিক স্তর থেকেই তাঁদের পিছু হঠে যেতে হয়।