লকডাউনের মাঝে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো সব ওলট-পালট করে দিয়ে গেল আমফান । ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের নিট ফল, একের পর এক কৃষি জমি ধুলিস্যাৎ হয়ে ফসল নষ্ট হয়েছে । একই অবস্থা মাছ চাষের। আর সেই ক্ষতির ফলে আগুন বাজার। আলু, পটল, ঝিঙে থেকে কাঁচা লঙ্কা। দামটা আকাশছোঁওয়া । মধ্যবিত্তের পকেটে টান।
কলকাতার পাইকারি বাজারের পাশাপাশি খুচরো বাজারেও আগুন ছুটছে।
বাজারগুলোতে আলু ও পেঁপে ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম ৫০ টাকার বেশি রাখছেন বিক্রেতারা। আর চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ, মাংস, তেল ও ডিম। ২৫০ টাকার নিচে মিলছে না কোনও ধরনের মাছ। মুরগির দাম একলাফে প্রতিকেজি ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ।
তবে অপরিবর্তিত রয়েছে চালসহ মুদিপণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় জীবনযাপনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন সীমিত আয়ের নিন্ম ও মধ্যবিত্তরা।ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার হলে এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
আমফানের তাণ্ডবে যেভাবে ফসল নষ্ট হয়েছে, ফলে
প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকা। প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। দামের দিক থেকে এর পরেই রয়েছে পটল, করলা ও উচ্ছে। বাজারভেদে প্রতি কেজি পটল, করলা ও উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। এছাড়া ঢেঁড়স, লাউ, ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে।
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার তালিকায় থাকা শসার বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে , যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা। শিমের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হতো ৪০ টাকা দরে।
চড়া দামের বাজারে তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে আলু, পেঁপে, পাকা টমেটো ও গাজর। আলু আগের মতোই ২২ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, পাকা টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর পাওয়া যাচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে।
প্রতি কেজি পুঁই শাক ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে বেশ কিছুদিন স্বস্তি দেওয়া পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে যায়। বাজারভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। তবে আমদানি করা পেঁয়াজ আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমফানের কারণে সবজির অনেক ক্ষতি হয়েছে। উৎপাদন কমায় সরবরাহ কমেছে ফলে দাম কিছুটা বেড়েছে।
গত সপ্তাহের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে খাসি ও মুরগির মাংস। বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।
খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ।
এদিকে মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেল, সব থেকে কম দামে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া। আগের সপ্তাহের মতো তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং চাষের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, মাছের দাম অনেকটাই নির্ভর করে আড়তে সরবরাহের ওপর। মাছের উৎপাদন কম হওয়ায় কয়েক মাস ধরে তুলনামূলক মাছ কম আসছে। যে কারণে সব ধরনের মাছের দাম বেশি।
তবে বেড়েছে সবধরনের ডিমের দাম। মুরগির ডিম প্রতি ডজনে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৮ টাকা। হাঁসের ডিম ১৫৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৯৬ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। সবমিলিয়ে আমফানের দৌলতে মধ্যবিত্তের মাথায় হাত ।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.