করোনা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের দ্বিতীয় পর্যায়ের ঘোষণা হল বৃহস্পতিবার। সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয়ে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এই পর্যায়ে পরিযায়ী শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকার এবং প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ঘোষণা হয়েছে। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসাবে এর আগে বুধবার মাইক্রো-স্মল-মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ নিয়ে প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। এদিন অর্থমন্ত্রী কেন্দ্রের নটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন। করোনা বিপর্যয়ে গরিব মানুষের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা মোদি সরকারের অগ্রাধিকার বলে জানান তিনি। অর্থমন্ত্রীর প্যাকেজ ঘোষণায় রয়েছে:
২৫ লক্ষ নতুন কিষাণ ক্রেডিট কার্ডে ঋণ। মার্চ-এপ্রিলে ৬৩ লক্ষের ঋণ মঞ্জুর। প্রায় ৮৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।
গত দু মাসে ১১ হাজার কোটি টাকা পরিযায়ীদের জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে। তিনবার খাওয়া ও থাকার জন্য এই টাকা বরাদ্দ।
১২ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী ৩ কোটি মাস্ক এবং ১.২০ লিটার স্যানিটাইজার তৈরি করেছে।
১০০ দিনের কাজের ন্যূনতম মজুরি ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০২ টাকা। গত বছরের তুলনায় কর্মদিবস বাড়ছে ৫০ শতাংশ। ১৪ কোটি ৬২ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। এই কাজে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। নিজের রাজ্যেও ১০০ দিনের কাজ পাবেন পরিযায়ীরা। অতিরিক্ত ২.৩৩ কোটি শ্রমিককে ১০০ দিনের কাজে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারগুলিকে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য দেশের সর্বত্র ন্যূনতম বেতন নিশ্চিত করা, বেতনে সমতা বজায় রাখা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও ইএসআই কভারেজ, সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক, যাদের রেশন কার্ড নেই, তারা আগামী দু’মাস বিনামূল্যে রাজ্য সরকারগুলির মাধ্যমে ৫ কেজি চাল, গম ও ১ কেজি ডাল পাবেন। রেশন কার্ড না থাকলেও রেশন মিলবে। আট কোটি পরিযায়ী শ্রমিক এতে উপকৃত হবেন। এক রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক অন্য রাজ্যে গিয়েও রেশন তুলতে পারবেন। পরিযায়ীদের চিহ্নিত করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি। এই রেশন খাতে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। অগাস্ট থেকে এক দেশ এক রেশন কার্ড চালু করা লক্ষ্য।
শহরের গরিব পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে শহরাঞ্চলে কম ভাড়ায় থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য রেন্টাল হাউসিং স্কিমের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
৫০ লক্ষ স্ট্রিট ভেন্ডার বা রাস্তার হকারদের টাকার জোগান দিতে সহজ শর্তে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। এই সহায়তা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
মধ্যবিত্তদের জন্য ক্রেডিট লিঙ্ক সাবসিডি স্কিম।সস্তার গৃহঋণে ভরতুকির মেয়াদ বাড়ছে। ভরতুকি মিলবে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত।
মুদ্রা শিশু লোনে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণে ২ শতাংশ কম সুদের সুবিধা মিলবে।
কৃষকদের জন্য ফসল কাটা ও বীজ কিনতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল। নাবার্ডের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হবে। ৩ কোটি কৃষক উপকৃত হবেন। পশুপালন ও মৎস্যচাষেও ঋণ দেওয়া হবে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেই মিলবে ঋণ। কম সুদে কৃষি ঋণ মিলবে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড না থাকলেও ঋণ পাওয়া যাবে।