স্বৈরাচারী ভাবমূর্তির জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। সম্প্রতি দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই শাসকের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা । জানা গিয়েছে যে, কিম জং উনের শারীরিক অবস্থা বেশ সঙ্কটজনক। 
নিজেকে বয়স্ক হিসেবেই দেখাতে পছন্দ করেন উত্তর কোরিয়ার এই শাসক। তাঁর জন্মের সাল এবং তারিখ নিয়ে নানান ধন্দ্ব এবং ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছেন কিম নিজেই। কোথাও বলা হয় কিমের জন্ম ১৯৮২ সালে। কোথাও আবার ১৯৮৩। এমনকী কোথাও কোথাও কিমের জন্মের সাল ১৯৮৪ ও করা হয়েছে। শুধু সাল নয়। জন্ম তারিখ নিয়েও আছে বিস্তর ধন্দ্ব। যদিও কিম কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজের জন্মের সাল লেখেন ১৯৮২। এহেন কিমের জীবনযাপনের ফিরিস্তি শুনলে যে কারও চোখ কপালে উঠতে বাধ্য ।
খেয়ালি কিম সুর তোলেন ঘরে রাখা দামি দামি পিয়ানোয়। সিনেমা দেখেন নিজের ব্যক্তিগত প্রেক্ষাগৃহে বসে। বিদেশি সিগারেটে এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দেন ৪৪ ডলার। চুমুক দেন আরও দামি হুইস্কিতে। রসেবশে এলাহি এক জীবনযাপন করেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন।
দেশি, সহজলভ্য সুরায় কোনও কালেই রুচি ছিল না তাঁর। এলিট বন্ধুবান্ধব ও নিজের জন্য বছরে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের শুধু সুরাই আমদানি করেন। পছন্দ করেন হুইস্কি এবং কগন্যাক। কিন্তু যে কোনও ব্র্যান্ডের নয়। হেনেসির মতো ব্র্যান্ডের হুইস্কির অনুরাগী, যার একটা বোতলের দামই পড়ে ২,১৪৫ ডলার।
এমনকি,ডায়েট নিয়ে কোনওরকম কার্পণ্য নেই কিমের। সেরা সেরা জিনিস ছাড়া মুখেই তোলেন না। পর্ক খেলে তা আনানো হয় ডেনমার্ক থেকে। ইরান থেকে আসে ক্যাভিয়ার। বিফ খেলে জাপানের। নিজের খাওয়ার পিছনে মাসে কয়েক মিলিয়ন খরচ করা তাঁর কাছে জলভাত।
শুধু খাওয়ার পিছনে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেন না, ধূমপানেও আছে বিশেষ পছন্দ। ফ্রেঞ্চ ডিজাইনার সিগারেট ছাড়া কিম জংয়ের এক মুহূর্ত চলে না। ইভেস সেন্ট লরেন্টের যে সিগারেটে তিনি সুখটান দেন, তার এক প্যাকেটের দাম ৪৪ মার্কিন ডলার।
কিমের পিয়ানোর কালেকশান শুনলেও চোখ কপালে উঠবে। তিন ডজনের কম নয়! এক একটার খরচই ৬৪,৪৫১ ডলার।
কিম কখন যে কোথায় থাকেন, কেউ জানেন না! জানবেনই বা কী করে! একটা-দুটো নয়, ১৭টি প্রাসাদ রয়েছে কিমের। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো এক একদিন এক এক প্রাসাদে রাত কাটান এই বিলাসী মানুষটি। নিজের জন্য একটি দ্বীপও রয়েছে তাঁর, যদিও সেখানে সবার প্রবেশাধিকার নেই।
খামখেয়ালি এই শাসকের ভিতরে শিশুসুলভ ব্যাপারস্যাপারও কাজ করে। যে কারণে বিনোদন পার্কও তৈরি করেছেন । জলকেলির জন্য রয়েছে আবার ওয়াটার পার্কও।
দুনিয়ার আর কারও ব্যক্তিগত সিনেমা হল আছে কি না, জানা নেই। কিন্তু কিমের আছে। যেখানে এক হাজার আসন রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ায় অন্য দেশের ফিল্মের ডিভিডি আনানো নিষিদ্ধ। কিন্তু কিমের নিজস্ব ডিভিডি কালেকশনে রয়েছে ২০ হাজার সিনেমার ভিডিও । যার একটা বড় অংশই পশ্চিমি। র্যাম্বো, ফ্রাইডে দ্য থার্টিন্থ… কী নেই সংগ্রহে!
জলবিলাস বিশেষ পছন্দ তার। তাই বাইচ নৌকোও রয়েছে কিমের, যা অন্যদের থেকে অবশ্যই আলাদ। কল্পনাই করা যায় না, ২০০ ফুটের বড়সড় বিলাসী বাইচ। রাজকীয় এই নৌকো তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৮০ লক্ষ ডলার।
দামি দামি ঘড়িরও কালেকশন রয়েছে উত্তর কোরিয়ার এই নায়কের। শুধু ব্যক্তিগত হাতঘড়ির পিছনেই খরচ করেছেন ৮২ লক্ষ ডলারের বেশি।
নিজে যেমন নামীদামি জিনিস ব্যবহার করেন, স্ত্রীকেও সেভাবেই রেখেছেন। ২০০৯-এ রি সোল-জুনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে উপহারে উপহারে স্ত্রীকে ভরিয়ে দিয়েছেন। কেমন গিফট দেন, একটা উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন। সম্প্রতি ক্রিস্টিয়ান ডিওরের একটি হ্যান্ডব্যাগ রি’কে উপহার দিয়েছেন, যার দাম ১,৪৫৭ মার্কিন ডলার। যেখানে উত্তর কোরিয়ায় মানুষের গড় বার্ষিক রোজগার ১,৮০০ মার্কিন ডলার। 
গাড়ির প্রতিও প্রচণ্ড শৌখিন কিম। কিমের গ্যারেজে ১০০টি গাড়ি রয়েছে। সব ধরনের বিখ্যাত ছোট-বড় সবরকমের গাড়িই রয়েছে উত্তর কোরিয়ার শাসকের। তবে কিমের সবথেকে পছন্দের গাড়ি মার্সিডিজ বেঞ্জ। সবমিলিয়ে বেশ রসেবশেই আছেন উত্তর কোরিয়ার এই শাসক।
Home আন্তর্জাতিক দোর্দণ্ডপ্রতাপ কিম জং উন-এর বিলাসবহুল জীবনযাপনের ফিরিস্তি শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.




























































































































