মুখে বিভিন্ন রঙ মেখে কেউ সাজেন কালী, শিব, পার্বতী, কেউ বা লোকনাথ। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত বহুরূপী সেজে দিন গুজরান তারকেশ্বরের জ্যোৎশম্ভু গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামের চলতি নাম বহুরুপী গ্রাম।বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডে তারকেশ্বর রেলগেটের পাশে তাঁদের বাস। বাপ-ঠাকুরদার পেশাকে টিকিয়ে রাখতে ভোর হতেই বিভিন্ন দেবদেবীর সাজে সজ্জিত হয়ে বেরিয়ে পড়েন ভিক্ষা করতে। তারকেশ্বর থেকে ট্রেনে চেপে কোলকাতা ও শহরতলিতে যাতায়াত। সারাদিন উপবাস থেকে বিভিন্ন দোকান, বাড়ি ঘুরে রাতে ঘরে ফেরা। যেটুকু ভিক্ষার দান পান, তা দিয়ে পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেন এই বহুরূপীরা। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতে কর্মহীন অবস্থায় তাঁরা। বন্ধ ট্রেন চলাচল থেকে বাজার, দোকান। এমনিতেই সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তার উপর লকডাউনের জেরে কঠিন পরিস্থিতি। কোনও সরকারি ত্রাণ সামগ্রী পাননি বলে অভিযোগ বহুরূপী গ্রামের বাসিন্দাদের। একমাসের লকডাউনে ফুরিয়ে এসেছে ভিক্ষার ঝুলিতে থাকা দানের অর্থ। তাঁদের আর্জি, এই কঠিন পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হোক তাঁদের দিকে। না হলে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রীনাথ বহুরূপীদের বংশধরদের হয়ত অনাহারেই প্রাণ যাবে।
