আগামী ৩ মে’র পর কী পদক্ষেপ? তা নিয়ে সোমবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ফের বৈঠক করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কারণ, ওইদিন রাত ১২টার পর শেষ হচ্ছে দ্বিতীয় দফায় লকডাউন। তাই এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশের মানুষ। মোদির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের এই বৈঠকে যোগ দেবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে সে দিকেও নজর থাকবে সকলের।
এর আগে গত ২ এপ্রিল প্রথমবার করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর দ্বিতীয় বৈঠক হয় চলতি মাসের ১১ তারিখ। আগামীকাল, সোমবার সকাল ১০টায় ফের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই বৈঠক করবেন মোদি। মারণ ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার পর এই নিয়ে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে পর্যালোচনায় বসবেন প্রধানমন্ত্রী।
কী আলোচনা হবে ওই বৈঠকে? অনেকগুলি সম্ভাবনা উঠে আসছে। সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেতে পারে আগামী ৩ মে দ্বিতীয় দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তা কী আরও বাড়ানো হবে নাকি লকডাউন উঠে গেলে পরবর্তী পরিস্থিতি কীভাবে সামলানো হবে। তা নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হবে? পাশাপাশি, ২০ এপ্রিল থেকে যে ক্ষেত্রগুলি ফের চালু হয়েছে, রাজ্যগুলিতে তার পরিস্থিতি এবং মোটের উপর করোনা সংক্রমণ নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
এরই মধ্যে আবার বেশকিছু বিষয় নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত হয়েছে। বিশেষ করে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন দেখার, সোমবারের বৈঠকে এই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী উত্থাপন করেন কিনা।
অন্যদিকে, আগের বৈঠকে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বকেয়া ১০,৪৫৯ কোটি টাকা মেটানোর কথা তিনি বলেছিলেন। এরপর করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র রাজ্যগুলির জন্য বেশকিছু আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। মুখ্যমন্ত্রী আবার নতুন করে কোনও আর্থিক অনুদান দাবি কটন কিনা সেটাও দেখার।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছিলেন, লকডাউন একসঙ্গে না তুলে যদি তিন-চারটি ধাপে তা তোলার। বিষয়টি নিয়ে এই বৈঠকে ফের আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সংক্রমিত এলাকা এবং অসংক্রমিত এলাকার জন্য আলাদা পরিকল্পনা হতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। অর্থাৎ, হটস্পট ও রেড জোনগুলিতে লকডাউন বজায় রেখে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সেখানে শর্তসাপেক্ষে ধীরে ধীরে লকডাউন তোলার প্রস্তাব দিতে পারেন মমতা।
ভিনরাজ্যে আটকে থাকা এ রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরানো কিংবা এ রাজ্যে কাজে এসে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা বা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও এই বৈঠকে তুলতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
যে যেখানে আটকে পড়েছেন, সেখানেই তাঁদের কাজ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে এই সব ক্ষেত্রের কাজকর্ম কতটা চালু হয়েছে এবং সেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে কাজ হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে আবার সারা দেশেই টেস্ট কিটের অভাবের অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রের ত্রুটিযুক্ত কিটের প্রসঙ্গটিও তুলতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, পর্যাপ্ত কিটের অভাবে টেস্টের সংখ্যা কম হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রের Rapid Test বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারেন মমতা।
তবে ২৭ এপ্রিল সারা দেশে সংক্রমণ এবং বৃদ্ধির হারের চিত্রটা দেখেই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে। সবমিলিয়ে করোনা মোকাবিলায় সোমবারের বৈঠক খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।





























































































































