
২২ দিনে ১ লক্ষ দর্শন ! রেকর্ডের বিনীত দাবি কি করতে পারি না?
করোনাযুদ্ধে লকডাউনপর্বে বিশ্বব্যাপী পাঠকপাঠিকার দরবারে নতুন ই-বই পেশের ভাবনা থেকে ই-রিডার্সের যাত্রা শুরু।
একটি ওয়েবসাইট https://ereaders.co.in তৈরি হল। এটিই প্রকাশ করবে ই-বই। এটিই হবে লাইব্রেরি। আপাতত বিনামূল্যে।
২২ মার্চ জনতা কার্ফু। ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন। সাইট এবং প্রথম ই-বই প্রকাশিত ১ এপ্রিল। আমাদের লক্ষ্য ছিল নববর্ষ পর্যন্ত ৬টি বই। এবং সাইটে ২ থেকে ৩ হাজার হিট বা দর্শন।
বিশ্বব্যাপী পাঠকের সাড়া দেখে আমরা এই পরীক্ষামূলক কাজটিতে এগিয়েছি।
আজ ২২ এপ্রিল সকালে আমাদের প্রকাশিত ই-বই ১৪। দুপুরে ১৫ তমটি আপলোড হবে।
এবং সাইটে দর্শন বা হিট সংখ্যা ১ লক্ষ ১ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
আমরা অভিভূত।
লকডাউনে এই ভাবনা ও রূপায়ণ কম কঠিন কাজ নয়। আমরা যে যার বাড়িতে। যারা লিখছেন, যিনি লে আউট করছেন, যিনি তথ্য প্রযুক্তির কাজ করছেন; কারুর পরস্পরের সঙ্গে দেখা নেই। সব ফোন, ইমেল, হোয়াটসঅ্যাপে চলছে। অথচ কার্যত রোজ একটি করে ই-বই বিশ্বব্যাপী পাঠকের হাতে যাচ্ছে। দৈনিক অন্য সব জরুরি কাজ সেরেও স্রেফ নতুন কিছু করার চেষ্টায় এই অভিযান। নতুন বিষয়ভাবনা এবং প্রস্তুতি। এভাবে কাজে হয়ত কিছু ভুলও থেকে যাচ্ছে। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। পরে সংশোধন করা হবে।
লিখতে ভালো লাগছে তথ্য প্রযুক্তির আজরা খান আর তাঁর টিম জানাচ্ছেন যে সবসময়ই বিশ্বের কোনো না কোনো প্রান্তে কিছু সংখ্যক পাঠক সাইটে এসে কোন না কোন বই পড়তেই থাকছেন।
আপনাদের এই সহযোগিতায় আমাদের এই ছোট্ট টিম আপ্লুত। আরও উৎসাহিত। অতিথি লেখকদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
লকডাউনে বিশ্বের বুকে নতুন সাইট চালু করে ই-বই প্রকাশ; এত ই-বই; অল্প সময়ে লক্ষাধিক দর্শন ও পঠন; সবিনয়ে আমরা বাংলা থেকে এই রেকর্ড দাবি করতে পারি তো?
আরে, আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলুক না মিলুক; পাঠকপাঠিকারা মনে রাখলেই হল।
লকডাউনে কয়েকজন পাগল এইসব উদ্যোগ নিয়েছিল।
বর্ষীয়ান রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরবন্দি থেকে লেখার ডিক্টেশন দিচ্ছিলেন আর আরেক প্রান্তে তরুণ সায়নজিৎ তা লিখে পাঠাতে ব্যস্ত!
আমাদের আব্দার রেখে জয় গোস্বামী লিখতে বসেছেন করোনা নিয়ে কবিতা ।
ই-বই আঙুল দিয়ে পাতা ওল্টালে কাগজের মতই শব্দ আসছে।
বাংলা বইয়ের জগতে এই ব্যাপ্তিতে নতুন লেখা নিয়ে কাজ আগে হয় নি।
বড় হাউস স্বীকৃতি দেবে না।
কদিন পর দেখবেন এটাই ট্রেন্ড হবে আর ট্রেন্ড সেটারদের টপকে জ্ঞান দেবার লোকের ছড়াছড়ি হবে।
তবে অনেক প্রতিষ্ঠিত সংস্থার কর্ণধারও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন; এও তো বড় ভালো লাগার।
প্রিয় বন্ধু, আমরা পিডিএফ ফাইল করছি না।
করছি ই-বুক। তাও নতুন লেখা নিয়ে।
অনুরোধ, সঙ্গে থাকুন, পড়ুন ও পড়ান।
দর্শনসংখ্যা লক্ষ ছাড়ানোয় খানিকটা আবেগতাড়িত হয়েই এই লেখা।
মনে পড়ছে ১৯৯৫/৯৬.
তখন শুধু দূরদর্শন আর কেবল টিভির সিনেমা। এম এস ও জমানাও আসে নি।
আমরা নেমেছিলাম নতুনত্বের ইতিহাস গড়তে।
প্রবাহ। দূরদর্শনের ইতিহাসে প্রথম বেসরকারি নিউজ ম্যাগাজিন। কত যুদ্ধ। আমি, সুজিতদা, খৈতানসাহেব, বিদিশাদি, তাপসদা- টিম নিয়ে বারবার মিটিং। অবশেষে সফল ও জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। টিভির ইতিহাসে বাংলাতে বেসরকারি খবর সেই শুরু। এসব কেউ মনে রাখে না। জানে না। জানতে দেয় না।
তা হোক।
সৃষ্টির তৃপ্তি তো থাকে।
সেটাই বুকভরা প্রাপ্তি।
ই-রিডার্সের ক্ষেত্রেও সেই অনুভূতিটাই হচ্ছে।
আমরা আরও ভালো ভালো ই-বই উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব। নানা স্বাদের।
অনুরোধ, আব্দার, সঙ্গে থাকুন।