লকডাউন মানব, কড়াকড়িতে এলাকাবিশেষে বৈষম্য না থাকে, কুণাল ঘোষের কলম 

0
29

 

কুণাল ঘোষ

1) করোনাযুদ্ধে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যা বলবে, মানব। মানতে হবে। কারণ উপকারটা আমাদের।

2) যুদ্ধের হাতিয়ার ‘সোশ্যাল ডিস্টেনসিং’। এটাই একমাত্র উপায় সংক্রমণ ঠেকানোর। লকডাউন মানব।

3) যারা জরুরি দরকার ছাড়া বেরিয়েছে, বেপরোয়া পাকামি করছে, পুলিশ কড়া হাতে আটকেছে। দু’ঘা দিয়েওছে। আটকও করেছে। সমর্থন করি।

4) লকডাউন দরকার। পুলিশের সক্রিয়তা প্রশংসনীয়। আবার কিছু মহল্লায় বেপরোয়া অমান্য সত্ত্বেও পুলিশ নিষ্ক্রিয়। এটা হতে পারে না। যে কটা মহল্লা নিয়ম মানছে না, কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ। বৈষম্যের আইন চলতে পারে না।

5) প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী যথাযথ ভূমিকা পালন করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয়তা তারিফের দাবি রাখে। এই দুজন যেভাবে কাজ করছেন, আস্থা রাখা যেতেই পারে।

6) এইকদিন খাদ্য ও জরুরি সামগ্রীর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখলে মানুষ স্বস্তি পাবেন। টেনশন কমবে।

7) ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার লড়াই ছাড়াও একটা অর্থনৈতিক যুদ্ধ আসছে। বড়সড় ধাক্কা সামলাতে হবে।

8) আপাতত দৈনিক আয়ভিত্তিক অসংগঠিত শ্রমজীবীদের বিকল্প আয় ও খাদ্যের ব্যবস্থা দেশজুড়ে করতে হবে। এটা আমি প্রথম দিন থেকে বলছি। আমরা বাড়ি থেকে না বেরোলে ভালো থাকব। কিন্তু অনেকে বাড়ি থেকে না বেরোলে সর্বনাশ। এটা ভয়াবহ অর্থসঙ্কট আনবে। সামাজিক প্রতিক্রিয়া হবে। বাংলাসহ কোনো কোনো সরকার কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। কেন্দ্রকে সার্বিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

9) বহু গরিব মানুষ অনেক কষ্টে বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছে। এখন কাজ বন্ধ থাকায় পরের মাসে স্কুলের বেতন দেওয়ার জায়গায় নেই। তাদের স্কুলেই রাখতে হবে।

10) রুটিন দরকারে হাসপাতাল যাওয়া ও বাজার থেকে বাড়তি কেনাকাটার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।

11) পথকুকুর এবং পাখিরা যাতে খেতে পায়, আসুন স্থানীয়ভাবে যে যতটুকু পারি করি।

12) লকডাউনের মাঝে বীরত্ব দেখিয়ে বেরোন, ক্লাব বা চায়ের দোকানে আড্ডা, ক্রিকেট বা ফুটবল- এসব চলবে না। এটা ছুটি নয়। লকডাউন।

13) টিভি চ্যানেলগুলো করোনাকভারেজ করুক। তার সঙ্গে ভিন্ন স্বাদের অনুষ্ঠানও করুক। যাতে দর্শকরা চাপের মধ্যেও একটু রিলিফ পান। তবে স্টুডিওতেও গাদা ভিড় করে জনগণকে ভিড় না করার জ্ঞান দেওয়াটা বন্ধ করুন। চারের বেশি গেস্ট নয়।

14) এই সময়ে বই পড়ার অভ্যেস ফেরানো যাক। অনেকে নিজের কিছু উদ্ভাবনী কাজে মন দিতে পারেন। এমন সময় বড় একটা আসে না।

15) এই সময় সরকারি নির্দেশ মানা ও সরকারি কাঠামোকে সাহায্য করা উচিত। করব।

16) টানা গৃহবন্দি থাকা কঠিন। কিন্তু এই বিপদের সময়ে একমাত্র সমাধান হিসেবে আপাতত লকডাউন ছাড়া উপায় নেই। ফলে টিকাটিপ্পনি বন্ধ রেখে লকডাউন সফল করানোটা সবার পক্ষে জরুরি।

17) এতদিন লকডাউন কঠিন। কিন্তু করোনা প্রতিরোধে এটা আমাদের করতেই হবে। না হলে আমাদের মত দেশে এর ছোবলে ক্ষয়ক্ষতি হবে অনেক বেশি।

18) লকডাউন চলুক। কিন্তু ব্লাডব্যাঙ্ক রক্তশূন্য না হয়ে যায়। দয়া করে জমায়েত ছাড়া রক্তদানের বিষয়ে খোঁজ নিন। মঙ্গলবার দুটি হয়েছে। এমন যদি আরও করা যায়।

19) করোনা নিয়ে নিশ্চিত খবর ছাড়া কেউ পোস্ট করবেন না। গুজবে কানও দেবেন না। দায়িত্বশীল সিটিজেন ও নেটিজেন এই লড়াইটায় গঠনমূলকভাবে এককাট্টা থাকুক।

20) করোনাযুদ্ধই অগ্রাধিকার। কিন্তু এই হইচইতে দমদম জেলের ভয়ঙ্কর কান্ড যেন জেল প্রশাসন ধামাচাপা দিতে না পারে।

21) এই লকডাউনে অনেকের ক্ষতি। দেশেরও ক্ষতি। তবে আজ জীবন বাঁচাতে, দেশ বাঁচাতে লকডাউন ছাড়া উপায় নেই। বাড়িতে থাকুন। এবং জরুরি দরকার ছাড়া যারা বাইরে যাচ্ছে, সমাজের স্বার্থে প্রতিবাদ করুন।