আসছে ‘দুধ পিঠের গাছ’, গ্রামবাসীরাই ‘প্রোডিউসার

0
5

গল্প, চিত্রনাট্য, শিল্পী, কলাকুশলী, পরিচালক সব কিছু তৈরি থাকলেও শুধু টাকার অভাবে অনেক সময়ই ফিল্ম তৈরি হয় না। ছবি তৈরি করতে প্রোডিউসার জোগাড় করতে হয় এটাই চিরাচরিত নিয়ম। তবে, এমন ছবিও হয়, যেখানে একজন নয়, গোটা একটা গ্রামই ‘প্রোডিউসার’। ‘দুধ পিঠের গাছ’ ছবির জন্য অর্থ জোগান দিয়েছেন নদিয়ার আড়ংঘাটা গ্রামের বাসিন্দারা। শুধু অর্থ জোগান দেওয়াই নয়, তাঁরা প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন ছবি থেকে পাওয়া অর্থ তারা ফিরে পাবেন।

কারা দিলেন ছবি তৈরির টাকা?
এই ছবি তৈরি হয়েছে তাঁদের টাকায়, তাঁরা কেউ চা, কেউ আখের রস বিক্রি করেন। কেউ আলু কিংবা মাছ বিক্রেতা। মনিহারির দোকান চালান বা পরিচারিকা তিনিও এই ছবির জন্য অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন।
‘দুধ পিঠের গাছ’ ছবির গল্প কী?
একটা গাছের গল্প, বৃক্ষরোপণের গল্প। একটি বৃক্ষ যেমন ক্রমশ জল, হওয়া, সূর্যের তাপ পেয়ে বড় হয়ে ওঠে, এই ছবিও তেমন ভাবে গল্পের ঠাসবুনটে চারাগাছ থেকে বৃক্ষের আকার নিয়েছে।
ছবির খরচ?
প্রায় ৫০লক্ষ টাকা। আর পুরোটাই দিয়েছেন আড়ংঘাটা গ্রামের বাসিন্দারা।

কীভাবে ছবির জন্য দেওয়া অর্থ ফেরত পাবেন গ্রামবাসীরা?
ফিল্ম রিলিজের পরে ছবি দেখিয়ে যা লাভ হবে, সেখান থেকে গ্রামবাসীদের যতটা সম্ভব টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
হঠাৎ এইভাবে কথা জোগাড় করে ছবি তৈরির কথা মনে হল কেন পরিচালক উজ্জ্বল বসুর?
একটা গ্রাম যেখানে টিভি ও ডিজিটাল মিডিয়ার প্রভাব কম, সেখানকার মানুষগুলোকে নিয়ে একটা সিনেমা তৈরি করার ভাবনা আসে উজ্জ্বল বসুর। ক্রাউড ফান্ডিং-এর মাধ্যমেই সেটা করতে চেয়েছেন তিনি। আগামী প্রজন্ম এই পদ্ধতিতে সিনেমা তৈরি পারবেন বলে আশাবাদী পরিচালক।
কী বলছেন ছবি অভিনেতা?
নদিয়ার আড়ংঘাটা গ্রামের সকল গ্রামবাসীদের সঙ্গে কাজ করে সবাই জানিয়েছেন তাঁদের খুব ভালো লেগেছে। গ্রামবাসীদের সাহায্যে অভিনেতা-কলাকুশলীরা আপ্লুত। টাকা দেওয়ার পাশাপাশি, মুড়ি, নাড়ু, চপ, চানাচুরও শুটিং স্পটে পাঠাতেন গ্রামবাসীরা। পুরো গ্রামটাই একটা পরিবারের মত হয়ে উঠেছিল।
খুদে সদস্য হারসিলের কথায় সে খুবই মজা করে কাজ করেছে।
ছবিতে হারসিলের মা হয়েছেন দামিনী বেণী বসু। পরিচালকের থেকে ছবির বিষয়টা শুনে না করতে পারেননি তিনি। শুটিং-এর ১৮দিন খুব মজা করে কাজ করে কাটিয়েছেন তাঁরা।
এই ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেন জয় সরকার। তাঁর কথায়, কিংবদন্তি অনাথবন্ধু ঘোষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে তিনি ভীষণ খুশি।
এখনও পর্যন্ত ৩ টি ফিল্ম ফেস্টিভালে পাঠানো হয়েছে এই ছবিকে। ৩ এপ্রিল মুক্তি পাবে ‘দুধ পিঠের গাছ’।