বিকাশ ভট্টাচার্যকে ফের ‘মেয়র-মুখ’ করেই কলকাতায় লড়বে বাম-কং জোট

0
2

সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত!

তিনি রাজি হলে, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকেই ফের ‘মেয়র-মুখ’ করে কলকাতা পুর-ভোটে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে চলেছে বাম-কংগ্রেস জোট৷ তৃণমূল এখনও মেয়র-পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে তুলে ধরেনি৷ তবে ধরে নেওয়াই যায়, বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে সামনে রেখেই তৃণমূল কলকাতা পুরনির্বাচনে লড়াই করবে। ওদিকে, বিজেপি কী করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

আগামী ৮ মার্চ বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস নেতৃত্বের বৈঠকে চূড়ান্ত আসন-রফা এবং কাউকে মেয়র হিসেবে প্রজেক্ট করার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে৷

২০০৫ সালে স্বয়ং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরিকল্পনায় বিকাশ ভট্টাচার্যকে মেয়র-প্রজেক্ট করে নির্বাচনে নেমেছিল বামেরা। এবং তৃণমূলের হাত থেকে কলকাতা পুরসভা কেড়ে নিতে ও সফল হয়েছিলো৷ সেবার বুদ্ধবাবুর কথায় কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হয়ে প্রথমবার নির্বাচনী রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। প্রথমবারের ভোটে জিতেই কলকাতার মেয়র হন ওই ২০০৫ সালেই। তারপরেও অবশ্য একাধিকবার প্রার্থী হয়েছিলেন, তবে কোনওবারই সফল হননি৷ কলকাতা পুর-ভোটে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাক্তন মেয়র বিকাশ ভট্টাচার্যকেই ফের মেয়র-প্রোজেক্ট করছে বামেরা৷ আলিমুদ্দিনের তরফে এ কথা প্রদেশ কংগ্রেসকে জানানোও হয়েছে৷ কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে সিপিএম নেতৃত্ব বিকাশ ভট্টাচার্যকে সামনে রেখেই ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করেছেন। কেন কাউকে সামনে রেখে ভোটে যাওয়া দরকার, শরিক নেতাদের সে কথা বুঝিয়েও বলেছেন সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার৷ সিপিএমের এই সিদ্ধান্তকে বৈঠকে সমর্থন
করেছেন সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রবীর দেব, আরএসপির তপন মিত্র, ফরওয়ার্ড ব্লকের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সব শরিক নেতারাই।

যাকে সামনে রেখে কলকাতায় বামফ্রন্ট প্রাসঙ্গিক হতে চাইছে, সেই বিকাশ ভট্টাচার্য প্রস্তাবটি কীভাবে নিয়েছেন?

সিপিএম তথা ফ্রন্টের এই কৌশলকে বাস্তবোচিত বলেই মনে করছেন বিকাশবাবু৷ তাঁর কথায়, ‘মেয়র হিসেবে কাউকে প্রজেক্ট করা হলে মানুষের মধ্যে ভরসা তৈরি হয়। মানুষ সেই ব্যক্তির তুল্যমূল্য বিচার করতে পারেন। কখনও কখনও পরিস্থিতির বিচারে উপযুক্ত ব্যক্তিকে মেয়র হিসেবে তুলে ধরার কৌশল কার্যকরীও হতে পারে।’ তবে তিনি পুরভোটে লড়তে ততটা আগ্রহী নন। বিকাশবাবু বলেছেন, “মনে হয় না দল এই নির্দেশ দেবে। দল সব দিক বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেবে। দেখা যাক”৷

কাউকে মেয়র-প্রজেক্ট করে পুরভোটে যাওয়ার প্লাস-পয়েন্ট অবশ্যই আছে৷ এই কৌশলে বার্তা যাবে যে বাম-কংগ্রেস শুধু ভোটে লড়াইয়ের জন্যই লড়ছে না, পুরসভার শাসনক্ষমতা দখল করতেই লড়াইয়ে নেমেছে৷ সেক্ষেত্রে কং-বাম জোটের ‘মুখ’-এর সঙ্গে কলকাতার ভোটাররা তুলনা করবেন
তৃণমূল ও বিজেপির সম্ভাব্য মেয়র-পদপ্রার্থীর মুখের সঙ্গে৷ সিপিএম মনে করছে, তেমন তুলনা হলে, একশো পা এগিয়ে থাকবেন কং-বাম জোটের
মেয়র-পদপ্রার্থী৷ কংগ্রেস অবশ্য বামেদের এই প্রস্তাবে এখনও সরাসরি হ্যাঁ বা না, কিছুই বলেনি৷ কংগ্রেস মনে করছে, এই প্রস্তাবের ভালো-মন্দ, দুটো দিকই খোলা আছে৷ কংগ্রেসের কথা, কাউকে ‘মুখ’ হিসেবে তুলে না ধরেও ভোটে সফল হওয়া যায়। তবে মুখ থাকলে কিছু সুবিধা অবশ্যই পাওয়া যায়। কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘মুখ’ হিসাবে সামনে যিনি থাকবেন, তাঁর ভাবমূর্তি ঠিকঠাক না হলে এই প্রোজেকশন বুম্যেরাং-ও হতে পারে।

এদিকে জানা গিয়েছে, কংগ্রেস কলকাতায় ৬২টি ওয়ার্ড দাবি করে সেইসব ওয়ার্ডের তালিকা সিপিএমকে দিয়েছে। ৬২টা ওয়ার্ডের দাবি করলেও ৪০-৪৫টি ওয়ার্ড পেলেই কংগ্রেস খুশি৷