সিএএ নিয়ে বম্বে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন মহারাষ্ট্রের এক ব্যক্তি। তার রায় দিতে গিয়ে কোর্ট প্রতিবাদের অধিকারকে মান্যতা দেয়। আর শনিবার এক আলোচনাসভায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বললেন, গণতান্ত্রিক সরকারে নির্বাচিত সরকারের উপর আস্থা হারানো ঠিক নয়। গণতন্ত্রে ভিন্নমত সেফটি ভালভের কাজ করে। এই ভিন্নমতের প্রশ্ন ও বিরোধিতার পথ বন্ধ করে দিলে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাংস্কৃতিক উন্নয়নের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের এই সংস্কৃতি বহুত্ববাদের উপরই তৈরি।
পি ডি দেশাই মেমোরিয়াল আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিচারপতির প্রশ্ন, তাহলে জাতীয় ঐক্য কী? উত্তর দিয়েছেন তিনি নিজেই। বলেছেন, জাতীয় ঐক্যের অর্থ হল, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বোধের মেলবন্ধন। সংবিধানের মূল উদ্দেশ্যগুলির প্রতি বিশ্বস্ত থাকা। তাই বাক স্বাধীনতা রক্ষা করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। আতঙ্ক বা দমন-পীড়ন করে সেই বক্তব্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হলে, রাষ্ট্রের উচিত তার প্রতিরোধ করা।
দেশ জুড়ে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের নীতিকে কটাক্ষ করে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, আমাদের সংবিধান রচয়িতারা হিন্দু বা মুসলিম ভারতের ভাবনাকে মোটেই স্বীকার করেননি। সাধারণতান্ত্রিক ভারতের কথা বলেছেন। তাই হিন্দু ভারত বা মুসলিম ভারতের ভাবনা শুধু সংবিধান বিরোধী নয়, বোকামিও। বিচারপতির এই বক্তব্য যে দেশের শাসক সরকারি দলকে লক্ষ্য করেই বলা হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দিল্লি ভোটে এই বিভাজনের নীতি প্রকাশ্যে চলে আসে। কেজরিওয়াল থেকে শুরু করে বিরোধীদের দেশবিরোধী, সন্ত্রাসবাদী পর্যন্ত বলা হয়। পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করা হয় শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে ধর্মনিরপেক্ষ দেশবাসীর কাছে আশার কথা, অধিকার রক্ষায় ভিন্নমতের আন্দোলনের কাছে সঞ্জীবনীমন্ত্র।