DSP দেবেন্দ্র সিং-এর গ্রেফতারি একাধিক গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে

0
2

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের DSP দেবেন্দ্র সিং টানা জেরায় শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছেন, জঙ্গিদের কাছ থেকে মাথাপিছু ১২লক্ষ করে টাকা তিনি নিয়েছেন৷ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের IG বিজয় কুমার এ কথা জানিয়েছেন৷

এদিকে, জঙ্গিদের সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা এই DSP দেবেন্দ্র সিং-এর গ্রেফতারি তুলে দিয়েছে একাধিক নতুন বিতর্ক।

প্রথম প্রশ্ন উঠেছে, বাজপেয়ী সরকারের আমলে হওয়া সংসদ হামলাতেও কি যুক্ত ছিলেন এই পুলিশ অফিসার? ওই হামলার সঙ্গে দেবেন্দ্র সিং-এর যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছিলেন সংসদ হামলার অন্যতম দোষী আফজল গুরু নিজেই। আফজল একাধিক বার দেবেন্দ্রের নাম বললেও, যেহেতু আফজল ছিলেন ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত, তাই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তের বক্তব্যকে সেদিন বিশেষ গুরুত্ব কোনও তদন্তকারীই দেননি। এই দেবেন্দ্র এখন হেফাজতে৷ এটাই স্বাভাবিক যে, দেবেন্দ্র ধরা পড়লে তাঁর সঙ্গে আফজল গুরুর সম্পর্ক থাকার বিষয়টি সামনে আসবেই৷ ঘটনার গতিপ্রকৃতিও তেমনই৷ ফলে প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ সেই পুরনো ঘটনা কেন সামনে আনা হলো৷ সরকার তো ইচ্ছা করলেই দেবেন্দ্রের গ্রেফতারির বিষয়টি চেপে যেতে পারতো৷ এমন চেপে যাওয়ার ঘটনা তো অসংখ্য রয়েছে৷ তাহলে ঢাক পিটিয়ে দেবেন্দ্রের গ্রেফতারির কথা কেন
প্রকাশ করা হল ?

দ্বিতীয় প্রশ্ন আরও গুরুতর এবং ভয়ঙ্কর৷ প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ।
তাঁর বক্তব্য, ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে আধাসেনার কনভয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ঠিক ভোটের আগে ওই হামলার ‘সময়’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।

আর আগামী মাসে দিল্লিতে ভোট। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এই গ্রেফতারি নিয়ে তাই প্রশ্ন তুলছেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তাঁর কথায়, ‘‘রাষ্ট্রীয়পদকপ্রাপ্ত ওই অফিসার কি ২৬ জানুয়ারির আগে জঙ্গিদের নিয়ে যাচ্ছিলেন পুলওয়ামা ধাঁচের হামলা করানোর জন্য? এখন কি তাঁকে সুরক্ষা দেওয়া হবে না কি মেরে ফেলা হবে?’’

স্থানীয় পুলিশ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, এ নিয়ে কেউই কোনও কথা বলছে না৷ তাদের মতে, তদন্ত চলছে। তাতেই সব স্পষ্ট হবে।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে সংসদ হামলায় ঘটনাতেও
নাম উঠে এসেছিল এই দেবেন্দ্র সিং-এর৷ দেবেন্দ্রের যুক্ত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন অন্যতম দোষী আফজল গুরু। ২০১৩ সালে লেখা এক চিঠিতে আফজল গুরু অভিযোগ করে, দিল্লিতে মহম্মদ নামে এক কাশ্মীরির থাকার ও একটি গাড়ি জোগাড়ের ব্যবস্থা করেছিলেন এই দেবেন্দ্র। আর ওই গাড়িটিই পরে সংসদ হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিলো৷ আর ওই মহম্মদ ছিল অন্যতম হামলাকারী। ফলে ৩ জঙ্গির সঙ্গে দেবেন্দ্রর একসঙ্গে থাকার ঘটনা আফজলের সেই পুরোনো অভিযোগকেই ফের জাগিয়ে তুলেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, তা হলে কি সংসদ হামলার পিছনে ওই পুলিশ অফিসারের প্রত্যক্ষ মদত ছিল?গোয়েন্দারা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন, ওই অফিসারের সঙ্গে জঙ্গিদের সুসম্পর্ক থাকার বিষয়টি নতুন নয়।

তাই বড়ভাবে উঠে আসছে আরও এক প্রশ্ন, দিল্লি ভোটের আগে পরিকল্পিত
“জঙ্গি হামলা” চালিয়ে দেশপ্রেমের হাওয়া তুলতে চাইছিলো কোনও পক্ষ ?

আরও পড়ুন-ছাত্রদের না উস্কে আগে কলেজে ভোট করাক তৃণমূল: দিলীপ