
বেলুড় মঠে শনিবারের রাত কাটিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্ন্যাসীদের জানিয়ে গেলেন, ‘‘ঠাকুর চাইলে 2020 সালেই ফের আসবো”৷
? বেলুড় মঠে যেমন কাটালেন প্রধানমন্ত্রী ?
|| শনিবার রাত ||
◾ শনিবার বেলুড় মঠে পা রাখার পরই প্রধানমন্ত্রীকে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী স্মরণানন্দের কাছে৷ ওনার সঙ্গে আলাপ করেন মোদিজি, কথা বলেন৷ তার পর অতিথি নিবাসের দোতলায় যান তিনি।
◾ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ‘ঘরের ছেলে’-র থাকার বন্দোবস্ত ও আপ্যায়নে কোনও ত্রুটি রাখেননি মঠ কর্তারা।
◾ প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিলো মঠের আন্তর্জাতিক অতিথিশালার 201 নম্বর ঘরটি৷
◾ 201 নম্বর ঘরের পাশে 202 নম্বর ঘরে তাঁর খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
◾ প্রধানমন্ত্রী যে ঘরে ছিলেন সেখানে সিঙ্গল বেড, নতুন কম্বল এবং টেবিল ল্যাম্প, হট-লাইন টেলিফোন, সোফা-সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা ছিল।
◾ প্রধানমন্ত্রীর জামাকাপড় ধোয়া-ইস্ত্রি করা এবং জুতো পালিশের জন্যেও দু’জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল।
◾ শনিবার রাত 10টার মধ্যে নৈশভোজ সেরে নেন প্রধানমন্ত্রী৷
◾ মোদিজি পেঁয়াজ- রসুন ছাড়া রান্না এবং গরম গরম খাবার পছন্দ করেন৷ মঠের তরফে রাতে তেমন ব্যবস্থাই করা হয়েছিলো।
◾ রাতে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে নিবেদিত ভোগ কপালে ঠেকিয়ে মোদিজি অল্প মুখে দেন৷ তবে পুরো পায়েসটাই খেয়েছেন তিনি।
◾ সঙ্গে খেয়েছেন রুটি, গুজরাতি খিচুড়ি, সেওভাজা-টম্যাটোর তরকারি, বেগুন ভর্তা, পোস্তর বড়া, মটর পনির, শ্রীখণ্ড বা গুজরাতি দই, মোয়া, সন্দেশ।
◾ খাবার শেষে শ্রীরামকৃষ্ণের ভোগে থাকা পানের লবঙ্গ ওনাকে দেওয়া হয়৷ তবে মোদিজি গোটা পানই খান।
◾ ওখানেই এক সন্ন্যাসী
প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান “আপনি কেমন আছেন?” প্রশ্নটি ছিলো গুজরাতিতে৷
গুজরাতিতে প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেন মোদিজি৷ হাসিমুখে ওই ভাষাতেই উত্তর দেন, ‘”আগে যেমন ছিলাম, এখনও তেমনই আছি।”
◾ এর পর সকলকে ‘শুভ রাত্রি’ জানিয়ে অতিথি নিবাসে তাঁর জন্য নির্দিষ্ট ঘরে ঢুকে যান মোদি।
◾ যাওয়ার আগে উপস্থিত সন্ন্যাসীদের বলেন, “সারাদিন কোনও কাজ হয়নি। এ বার দেশের কাজ করতে হবে।”
◾ ঘরে ঢুকে ফাইল নিয়ে বসে পড়েন প্রধানমন্ত্রী।
|| রবিবার সকাল ||
◾ রবিবার ভোর সাড়ে 4টে নাগাদ মঠের মূল মন্দিরে মঙ্গলারতি দেখার কথা ছিলো প্রধানমন্ত্রীর৷ শেষ পর্যন্ত তিনি যাননি। জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে না’কি ঘুম ভাঙেনি মোদিজির৷
◾ রবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে সকাল 6টার মধ্যে দক্ষিণী কায়দায় সাদা ধুতি-ফতুয়া পরে তৈরি হয়ে যান মোদিজি।
◾ অতিথি নিবাসের ঘর থেকে বাইরে আসার পর
রবিবার সকালে সন্ন্যাসীরা মোদিজির কাছে জানতে চান, ‘নতুন জায়গায় কেমন ঘুম হল?’ উত্তরে তিনি বলেন, “ঘুম না হওয়ার কারণই নেই। বরং একটু বেশিই ঘুমিয়েছি।বেলুড় মঠে থাকতে পেরে আমি ভাগ্যবান”৷ তখনই তিনি বলেন, শোয়ার 30 সেকেন্ডের মধ্যে ঘুম এসে যায় তাঁর৷ রোজ রাতে 3 থেকে সাড়ে 3 ঘণ্টা ঘুমোন তিনি।
◾ সকালেই স্বামী বিবেকানন্দের ঘরে যান মোদিজি৷ সেখানে কিছুক্ষণ ধ্যানও করেন।
◾ ধ্যান সেরে বেরিয়ে সন্ন্যাসীদের মোদিজি বলেন, ‘‘স্বামীজির ঘরে আমার জীবনের অমূল্য সময় কাটানোর সুযোগ মিলেছে। মনে হচ্ছিলো, স্বামীজি আমাকে দেশের জন্য আরও অনেক বেশি কাজ করতে বলছেন।’’
◾ এর পর সকালেই খালি পায়ে হেঁটে মঠের বিভিন্ন মন্দিরে গিয়ে ধ্যান-প্রণাম সারেন প্রধানমন্ত্রী।
◾ মঠের মূল মন্দিরে গিয়েও শ্রীরামকৃষ্ণদেবকে প্রণাম সারেন এবং তার পর সন্ন্যাসী- ব্রহ্মচারীদের সঙ্গে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী ৷
◾ তখনই উপস্থিত সন্ন্যাসী- ব্রহ্মচারীদের মোদিজি বলেন, ‘‘দেশবাসীর কাছে বেলুড় মঠ তীর্থভূমি, অন্য তীর্থভূমির থেকে কম নয়। আমাকে থাকার অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট মহারাজ ও অন্যান্য সন্ন্যাসীদের কাছে কৃতজ্ঞ।’’ মোদিজি বলেন, “বেলুড় মঠে আসা মানে নিজের ঘরে আসা”৷
◾ মোদিজি এর পর প্রাতরাশ সারেন থেপলা, চিনি ছাড়া আদা-দুধ চা এবং চিড়ের উপমা দিয়ে ৷
◾ এর পরেই প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন যুব দিবসের মূল অনুষ্ঠানে।
◾ মূল অনুষ্ঠান শেষের পর অতিথি নিবাসে ফিরে আসেন মোদিজি৷
◾ ফের একবার চা খেয়ে এবারের মতো বেলুড় মঠকে বিদায় জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷