পর্দা ফাঁস! প্রকাশ্যে জেএনইউ কাণ্ডের পাণ্ডারা

0
2

ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ল বিড়াল। জেএনইউ কাণ্ডের পর্দা ফাঁস। একটি স্টিং অপারেশন বেনকাব করে দিল বিজেপি, দিল্লি পুলিশ আর এবিভিপির অশুভ আঁতাতের চক্রান্তকে।

শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হল না। শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের সৎ প্রচেষ্টায় উঠে এল আসল সত্য। আর এই সত্য ঘটনা সামনে আসার পরেই বোঝা যাবে, কেন আসল ঘটনা চেপে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা।

এই কাণ্ডের মূল মাথা কে? ‘ইন্ডিয়া টুডে’র স্টিং অপারেশন থেকে উঠে এসেছে এক ছাত্রের নাম, সে হল আকাশ অবস্থি। স্টিং অপারেশনে আকাশ ৫জানুয়ারির ভিডিও ফুটেজে নিজেকে চিহ্নিত করেছে। বলেছে, এই হলাম আমি, আকাশ অবস্থি।

কে এই আকাশ অবস্থি?
——————————–
জেএনইউর অন লাইন রেকর্ড বলছে আকাশ ফ্রেঞ্চ ডিগ্রি কোর্সের প্রথম বছরের পড়ুয়া। থাকত কাবেরী হস্টেল। এবিভিপির সক্রিয় কর্মী।

আকাশ অবস্থি

হামলার ভিডিওতে আকাশ
————————————-
৫জানুয়ারির হামলার যে ভিডিও ইতিমধ্যে ভাইরাল, সেই ভিডিও স্টিং অপারেশন করা সাংবাদিককে দেখিয়ে আকাশ বলে, ওই যে হাতে স্টিক, মাথায় হেলমেট, করিডর দিয়ে ছুটে যাচ্ছে, হাতের সামনে যা পাচ্ছে তাই ভাঙছে, যে সামনে পড়ছে তাকে মারছে, সেটাই আমি।

আকাশের সঙ্গে কথোপকথন
—————————————
? হাতে ওটা কী?
আকাশ : পেরিয়ার হস্টেলের একটা ফ্ল্যাগ থেকে লাঠিটা খুলে নিয়েছিলাম।

? কাউকে মেরেছিলে?
আকাশ : মাথায় রাখবেন, আমি কানপুরের ছেলে। ওখানে রাস্তায় দিনে-দুপুরে গুণ্ডামি দেখে আমি অভ্যস্ত। আমি ছোটবেলা থেকেই ওদের দেখতাম।

? কেন মারলে?
আকাশ : ৫ জানুয়ারি বাম সমর্থকরা আমাদের পেরিয়ার হস্টেলে এসে মেরেছিল। এটা ছিল ওদের মারের বদলা।

?কীভাবে লোক জোগাড় করলে?
আকাশ : পরিস্কার বলছি, সব লোক জোগাড় আমি করেছি। জেএনইউর এবিভিপির মাথায় এতো সব বুদ্ধি নেই। এই পরিস্থিতিতে আপনাকে সুপারিন্টেন্ডেন্ট বা কমান্ডারের মতো কাজ করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, কেন করছি, কোথায় করছি। ওদের বলে দিয়েছিলাম, মারদাঙ্গার পর কোথায় যেতে হবে, কোথায় লুকতে হবে। সব নির্দিষ্টভাবে করতে হবে। এবিভিপির কোনও পদেই ছিলাম না আমি। তবু ওরা আমার কথা শুনেছে। বাইরের ক্যাম্পাস থেকে এবিভিপির সমর্থকদের নিয়ে এসেছিলাম। আর সেটাও ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে। ওই কলেজের সংগঠনে এবিভিপির সম্পাদক আমার পাশে দাঁড়ায়। আমিই ওদের আসতে বলি।

হামলার সময় কী হলো?
——————————-

? হামলার ঠিক আগে খবর পেলাম সবরমতীতে পড়ুয়া আর শিক্ষকরা বৈঠক করছেন। আমরা হামলা করতেই ওরা পালাতে থাকে।। ভিডিওতে দেখুন, গাড়ি ভাঙছে, জানলার কাচ ভাঙছে, পড়ুয়াদের উপর হামলা করছ। বামেরা ভাবতে পারেনি পাল্টা মার হবে।

? কতজন ছিলে তোমরা? আকাশ : বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০জন, বাইরেরও প্রায় ২০।

?কীভাবে মারলে?
আকাশ : একটা দাড়িওয়ালাকে পেয়েছিলাম। দেখে কাশ্মীরি মনে হয়েছিল। ওকে পেটানোর পর লাথি মেরে দরজা ভাঙি।
? পুলিশ কী করছিল?
আকাশ : আরে যে ডিউটিতে ছিল, সে তো আমাদের উৎসাহিত করছিল। ওরা ক্যাম্পাসের মধ্যেই ছিল। পেরিয়ার হস্টেলে আগের হামলার সময় আমি পুলিশকে ডেকেছিলাম। তো সেই অফিসার আমাদের বলেছিল, মারো ওদের, মারো ওদের!
? হস্টেলের লাইট কারা নিভিয়েছিল?
আকাশ : কর্তৃপক্ষ… না, আমার মনে হয় পুলিশ।
? কিন্তু পুলিশ কেন এই কাজ করল?
আকাশ : জেএনইউতে এই জমায়েত পুলিশের পছন্দ নয়। তাই আমাদের সঙ্গ দিয়েছিল। আরে স্যার, পুলিশ কাদের আপনি জানেন না!
? মুখ ঢাকা দিলে কেন?
আকাশ : স্যার, এটা বামেদের কাছ থেকেই শেখা। বামেরাও ওই ভাবে এসেছিল। আমরা শুধু কপি করেছি। (এবার আকাশ ভিডিও পজ করে করে কারা ছিল তাদের চিনিয়ে দেয়।)

আরও এক স্বীকারোক্তি
——————————–
আকাশের পাশাপাশি তারই ফ্রেঞ্চ প্রোগ্রামের ক্লাস মেটও স্টিং অপারেশনা পরিস্কার জানিয়েছে, ‘হ্যাঁ, আমি ছিলাম।’ নাম রোহিত শাহ।

রোহিত শাহ

? কী করেছিলে?
রোহিত : আকাশকে হেলমেট দিয়েছিলাম। কারণ, আমি জানি কাচ ভাঙার সময় হেলমেট খুবই জরুরি। আমার ঘরেই এবিভিপির সকলে জড়ো হয়।
? কেন করলে?
রোহিত : এটা না করলে বামেরা বুঝতে পারত না আমাদের শক্তি কতোটা? আমি যা করেছি তার জন্য গর্বিত।
? কতজন ছিলে?
রোহিত : শুধু জেএনইউর ছিল ২০জন।

**এবিভিপি অবশ্য যথারীতি বলেছে, আকাশ বা রোহিত কেউই তাদের সংগঠনের নয়।