বৈদিক গণিত! সঙ্ঘের প্রস্তাবকে উপহাস করলেন অমর্ত্য

0
2

বৈদিক গণিত? কার্যত উপহাসের ভঙ্গিতে এই দাবিকে নস্যাৎ করে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন বললেন এই ধরণের বক্তব্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে পিছিয়ে দেবে। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের অনুপ্রেরণায় বিজেপি সরকার বৈদিক গণিত পাঠ্যক্রমে চালু করার সুযোগ খুঁজছে বহুদিন ধরেই। অমর্ত্য সেন প্রকাশ্যেই এই ধরণের প্রচেষ্টাকে সমূলে উৎপাটিত করলেন। ৪৮ঘণ্টা আগেই নোবেল জয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্যাসিস্ট আচরণের নিন্দা করেছিলেন। এবার অমর্ত্য।

অমর্ত্য বলেন, শিক্ষাব্যবস্থার ভারতীয়করণের নামে বা দেশীয়করণের নামে বিজ্ঞান এবং গণিতের পাঠ্যক্রম বদলানোর চেষ্টা চলছে। এটা দেশের নেতা-মন্ত্রীদের খুশি করতে পারে কিন্তু দেশকে পিছিয়ে দেবে। পিছিয়ে যাবে দেশের বিজ্ঞান গবেষণাও।

কেন বললেন এ ধরণের কথা অমর্ত্য? তাঁর যুক্তি পৃথিবী জুড়ে গণিত ও বিজ্ঞানের যে সূত্র মেনে চলা হয়, বৈদিক গণিত তা থেকে অনেকটাই আলাদা, কাল্পনিক। আর সেই সূত্র ধরে চললে আধুনিক গবেষণার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক থাকবে না।

কেন হঠাৎ এই প্রসঙ্গের অবতারণা করতে হলো নোবেলজয়ীকে? আসলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার খোল-নলচে বদলে দিতে চাইছে আরএসএস। ইংরেজির ওপর অযৌক্তিক নির্ভরতা কমানোর জন্য বৈদিক গণিত চালু করার প্রস্তাব দেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। শুধু তাই নয় এনসিআরআইটি বা ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের কাছে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বৈদিক গণিত চালু করার সুপারিশ করেন। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশের স্কুলে বৈদিক গণিত চালু করা হয়েছে। অমর্ত্য বলেন, আজকের সমস্ত বিজ্ঞান গবেষণা প্রাচীন মুনি-ঋষিরা আগেই আবিষ্কার করেছিলেন বলে যে প্রচার হচ্ছে, পুরোটাই ভ্রান্ত এবং অপপ্রচার। গণিত চর্চায় ভারতের অবদান রয়েছে। কিন্তু সেটা বৈদিক যুগ নয় অথচ সে নিয়ে মিথ্যা দাবি করে আসছে অনেকে। আর্যভট্ট কিন্তু বৈদিক যুগের নন। তিনি গনিতকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যান। পরে সেই ধারা বজায় রাখেন ব্রহ্মগুপ্ত, ভাস্কর সহ অন্যান্যরা। অমর্ত্যর সাফ কথা, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার না করে যদি অতীতের মুনি-ঋষিরা সব গবেষণা করেছিলেন বলে প্রচার করা হয়, তাহলে তা গোড়ায় গলদ হয়ে যাবে। বৈদিক যুগের গণিত প্রকৃত অর্থে গণিতই নয়।