আগ বাড়িয়ে পরস্পরবিরোধী নানারকম কথা বলেই সমস্যা তৈরি করেছেন মোদি সরকারের মন্ত্রীরা। বিরোধীরা সরকারের মধ্যে এই সমন্বয়হীনতার সুযোগ নিচ্ছেন এটা যেমন ঠিক, তেমনি সরকারের দুর্বলতা খুঁজে রাজনীতি করাই তো বিরোধী দলের কাজ। বিরোধী দলে থাকাকালীন বিজেপিও একই কাজ করত। আর সেই কারণেই এখন এনপিআর বা জাতীয় জনগণনাপঞ্জি এবং এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এক বিষয় নয় বলা সত্ত্বেও কেউ তা মানতে চাইছেন না। খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীই যে সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন এনপিআর হল এনআরসি-র প্রথম ধাপ। তার কী ব্যাখ্যা দেবে বিজেপি? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর এনআরসি ডিগবাজি তো ২০১৯-এর বর্ষসেরা হওয়ার যোগ্য। অবস্থা এমন জায়গায় গিয়েছে যে ২০১০-এ কংগ্রেস জমানায় দেশজুড়ে এনপিআর হলেও যারা কোনও উচ্চবাচ্য করেনি, এখন তারাও পথে নেমেছে!
এর একটাই কারণ। সরকারি ভাষ্যকে আর বিশ্বাস করতে পারছে না মানুষ। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরাই আজ একরকম কাল একরকম বলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন যে স্বয়ং মোদির কথাতেও সংশয় যাচ্ছে না। সরকারি ভাষ্যে আস্থাহীনতা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে বিজেপি-শরিক নীতীশকুমার পর্যন্ত বলছেন, কেন্দ্র কী করতে চায় তা আগে স্বচ্ছভাবে ব্যাখ্যা করা হোক। না হলে বিহারেও এনপিআর হবে না। ফলে এনআরসি-বিতর্কের পর এনপিআর নিয়েও বিরোধিতার মুখে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ। এই অচলাবস্থা কাটাতে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক ডেকে তাঁদের প্রশ্ন শোনা ও সংশয় দূর করার চেষ্টাই এখন মোদি-শাহর সামনে বিকল্প পথ হওয়া উচিত।