বাসস্থান? ফুটপাথের উপর ছোট্ট একটা তাঁবু। আলো নেই, জল নেই। বাথরুম বলতে পাবলিক টয়লেট। জল আনতে যেতে হয় বেশ কিছুটা দূরে। সঙ্গে কেউ নেই। একা একা লড়াই। খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। তাই ফুটপাতে ফুচকার ব্যবসা করে কোনওরকমে অন্ন সংস্থান। তবু স্বপ্ন দেখা ছাড়েনি বছর সতেরোর যশস্বী। মানে যশস্বী জয়সওয়াল। ক্রিকেট কিটস ওর কাছে পূজার নৈবেদ্য। আর ক্রিকেটের ভগবান শচীন তেন্ডুলকর। ২২গজ ওর ধ্যানজ্ঞান। সেই যশস্বী খেলছে এবার অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে। ওর গল্প শোনার আগে আসুন ওকে আগে স্যালুট জানাই। ওকে একটু স্নেহের আদর করি।

যশস্বীর বাড়ি উত্তরপ্রদেশের ভাদোইতে। কিন্তু ক্রিকেট খেলার টানে মুম্বইতে পাড়ি। মুম্বই অনূর্ধ্ব ১৯ দলে শুধু জায়গা করে নেয়নি, দাপিয়ে খেলছে। এই তো বিজয় হাজারে ট্রফিতে ২০৩ রান করল ১৫৪ বলে। ১২টি ছয় আর ১৭টি চার ছিল ইনিংসে। কিন্তু বাড়ি ঘরদোর নেই। মুসলিম স্পোর্টস ক্লাবের গায়ে তাঁবু খাটিয়ে থাকে। আর ফুচকা বিক্রি করে আজাদ ময়দানে। কিন্তু তাতেও একার সংসার চলে না। তবু আধপেটা খেয়েও স্বপ্ন দেখা ছাড়েনি একরত্তি ছেলেটা। বাবা দেশের বাড়িতে ফিরতে বললেও ফেরেনি। ও বলছিল, তাঁবুতে থাকা খুব কষ্টের। জল নেই, আলো নেই। বর্ষায় তাঁবু ভেসে যায়। ফুচকা আর ফল বিক্রি করে দিন চলে না। তবু শচীন স্যারের ব্যাটিং আমাকে মরতে দেয়নি। ওঁর ব্যাটিং দেখি। খুঁটিয়ে দেখি। ওনাকে দেখেই মুম্বইয়ে খেলার কথা ভাবি। বন্ধুরা আমার দোকানে ফুচকা খেতে এলে খারাপ লাগে, লজ্জা লাগে। কিন্তু উপায় কী বলুন! বাঁচতে হবে। ক্রিকেট খেলতে হবে যে! মুম্বইয়ের ফুটপাতে থেকেই বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ। এবার সেই সুযোগককে কাজে লাগিয়ে নামতে চায় আর এক জীবন-যুদ্ধে। বলছে, এই তো সবে শুরু করলাম। আরও এগোতে হবে। স্বপ্ন দেখার এই তো শুরু। আসুন ওকে সকলে মিলে আশীর্বাদ করি। ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে কে বলে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা যায় না!
আরও পড়ুন-গরচা-খুনে পরতে পরতে কিসসা, মেয়ের প্রেমিকই মায়ের ‘হার্ট বিট’































































































































