“ভাই ইতনা সান্নাটা কিঁউ হ্যায়?” বিধানসভা ঘুরে মন্তব্য ক্ষুব্ধ রাজ্যপালের

0
2

একের পর এক রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত চূড়ান্ত আকার নিল বৃহস্পতিবার। বিধানসভা ঘুরে দেখে সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এই ঘটনা লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি। ছুটির দিন হলেও রাজ্যপালকে স্বাগত জানানো প্রোটোকলের মধ্যে পড়ে। সেখানে রাজ্যপালের জন্য নির্দিষ্ট কেট গেট বন্ধ ছিল। এটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন ধনকড়। শুধু তাই নয়, এতে তাঁর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে মত রাজ্যপালের।

অধিবেশন মুলতুবি থাকবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার বিধানসভায় যাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেইমতো সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সেখানে পৌঁছে তাঁর জন্য নির্দিষ্ট তিন নম্বর গেট দিয়ে ঢুকতে যান জগদীপ ধনকড়। কিন্তু সেটি বন্ধ ছিল। ঘুরে অন্য গেট দিয়ে তিনি ঢুকেন বিধানসভা চত্বরে। তাঁকে স্বাগত জানাতেও কেউ উপস্থিত ছিলেন না। থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। তিনি অপমানিত বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান। তাঁর মতে, অধিবেশন না থাকলেও বিধানসভা তো বন্ধ নয়। তাহলে কেন গেট বন্ধ রয়েছে? এর পাশাপাশি তিনি জানান, তিনি যখন বিধানসভা আসতে চেয়ে তাঁর সচিবালয় মারফৎ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠান। তখন তিনি সাদরে সে প্রস্তাব গ্রহণ করেন। শুধু তাই নয়, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সস্ত্রীক তাঁকে বিধানসভায় আসার আমন্ত্রণ জানান বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁদের একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের পরিকল্পনা ছিল বলে দাবি ধনকড়ের। কিন্তু হঠাৎই অধ্যক্ষের সেক্রেটারি তরফে জানানো হয়, অন্যত্র বিশেষ কাজ পড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার বিধানসভায় থাকতে পারছেন না বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিধানসভায় আসার পরিকল্পনা পরিবর্তন করেননি রাজ্যপাল।

যদিও বৃহস্পতিবার একাই যান সেখানে। বিধানসভার লাইব্রেরি, স্থাপত্য এইসব ঘুরে দেখেন।বিধানসভা ঘুরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আজ তো ছুটির দিন নয়, তাহলে ইতনা সান্নাটা কিঁউ ভাই?”। রাজ্যপালের অভিযোগ, এতেই বোঝা যায় রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন।

সপ্তাহের শুরুতেই বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন রাজভবনে বেশ কিছু বিল আটকে রয়েছে। সেই কারণে বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি রাখা হচ্ছে। এর পরেই রাজ্যপাল তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন, “রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদ। সেটা কোনও সরকারি রাবার স্ট্যাম্প নয়। না দেখে কোন কিছুতে সই করা যায় না।” সোশ্যাল মিডিয়ায় একথা জানানোর পরে বৃহস্পতিবারই বিধানসভা ঘুরে দেখার প্রস্তাব জানিয়ে অধ্যক্ষকে চিঠি লেখেন তিনি। তখন থেকেই রাজ্যের রাজ্যপাল সংঘাতের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। একইভাবে উপযাজক হয়ে রাজ্যপাল বুধবার যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজস্ট্রিট ক্যাম্পাসে। সেখানেও তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে কোনও পদস্থ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন না। এই নিয়েও বিশ্বিবিদ্যালয়ে বসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ধনকড়। এরপর বৃহস্পতিবার এ বিধানসভার ঘটনা সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢাললো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।