বিলগ্নীকরণ : অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকার কিন্তু ব্যবসাদার নয়!

0
11

সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেচে সরকারের কোষাগার ভরানোর পথ নিয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। আর তা নিয়েই কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহল এবং অর্থনীতিবিদদের মধ্যে। তাঁরা বলছেন, সংসার চালাতে সোনা বেচে দেওয়ার মতো এই ঘটনা। ফলে লাভজনক সংস্থা বিপিসিএলকেও বেচে দিচ্ছে সরকার। বিপিসিএল বেচে সরকার ৬০হাজার কোটি টাকা কোষাগারে আনতে চায়। সরকারের লক্ষ্য, বিলগ্নিকরণ থেকে ১লক্ষ ৫হাজার কোটি টাকা তোলা। ২০২০ টার্গেট। এই মুহূর্তে মাত্র ১৭হাজার কোটি টাকা বিলগ্নি থেকে এসেছে। ফলে 28টি সংস্থা বেচে দিতে চায় সরকার। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে পাঁচটি সংস্থা দিয়ে শুরু করল সরকার। এগুলি হল বিপিসিএল, কন্টেনার কর্পোরেশন, শিপিং কর্পোরেশন, নিপকো ও টিহরি জলবিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। তিনটি সংস্থার নিয়ন্ত্রণ আর সরকারের হাতে থাকবে না, আর বাকি দুটি সংস্থা (নিপকো ও টিহরি) অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনটিপিসির হাতে যাচ্ছে। শুধু নয় তাই নয় ৭৫টি জাতীয় সড়ক প্রকল্পও বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে। গত এক বছরে যে সমস্ত জাতীয় সড়কের কাজ শুরু হয়েছে সেই প্রকল্পগুলিও এর মধ্যে থাকছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন জাতীয় সড়কের মত প্রকল্পগুলি বেসরকারি হাতে যাওয়া মানে মাত্রাছাড়া টোল ট্যাক্স যে এবার দেশজুড়ে হতে চলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না শুধু তাই নয় আগামী দিনে বেশ কয়েকটি সংস্থার অংশীদারিত্বে সরকার তাদের অংশ ৫১% নিচে নামিয়ে আনছে।

কিন্তু বিলগ্নীকরণ করে কি দেশের অর্থনীতির হাল ফিরবে? অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটা সাময়িক একটা পদ্ধতি হতে পারে, কিন্তু তা কখনওই দীর্ঘকালীন পদ্ধতি হতে পারে না। সরকারের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে, তৈরি করতে হবে গ্রামীণ ছোট ছোট শিল্প, এবং সেগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বড় শিল্প। এতে যেমন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে ঠিক তেমনিভাবে বড় শিল্পকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে ছোট শিল্পগুলি কাজে দেবে। সস্তা পথে গিয়ে আসলে আগামী দিনের অর্থনীতিকে প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করাচ্ছে কেন্দ্র। সরকার যে ব্যবসাদার নয়, তা মাথায় রাখতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা দিয়েই একটা জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ছবি তৈরি হয়। সমস্যার মূলে না গিয়ে দ্রুত সমাধানের কারণেই এই পথ নিতে হচ্ছে। যদিও এই সরকার ছ’বছর সময় পেয়েছিল। সামনে আরও চার বছর হাতে রয়েছে।