৯ বছর পর লাল আবিরে রঙিন প্রেসিডেন্সির দখল নিল এসএফআই

0
1

কলকাতার বুকে আবার লাল আবিরের উল্লাস। বহুদিন পর আওয়াজ উঠল রেড স্যালুট। ঝগড়া নেই, হাতাহাতি নেই, এমনকি নেই কোনও রেষারেষি। তৈরি ছিল পুলিশ। তৈরি ছিল বাহিনী। কিন্তু কাজে লাগল না কিছুই। সাম্প্রতিক অতীতে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হচ্ছে এমন নির্বিঘ্নে, তা ডায়েরির পাতা খুঁজেও পাওয়া গেল না। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে বিরোধী ছাত্র সংগঠন ইন্ডিপেন্ডেন্ট অরগানাইজেশনকে পর্যুদস্ত করল ভারতের ছাত্র ফেডারেশন। দীর্ঘ ৯ বছর পর প্রেসিডেন্সির ছাত্রসংসদ দখল করল এসএফআই। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পাওয়ার পর নতুন মডেলের নির্বাচনে প্রথম জয় এসএফআইয়ের।

সকাল সাড়ে দশটাতেই ভোট শুরু হয়ে গিয়েছিল। বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। জোর করে ঢোকার চেষ্টা হয়নি। পরিচয়পত্র দেখিয়ে পড়ুয়ারা ঢুকেছে, ভোট দিয়েছে, তারপর গেটের বাইরে বেরিয়ে এসেছে। অপেক্ষা করেছে ফলের জন্য। দুপুর একটা থেকে সিআর-এর ফল বের হতে শুরু করে। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই দেখা যায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রার্থীদের অনেকটা পিছনে ফেলে ৫৮-৪৫ আসনে জিতেছে এসএফআই। এআইএসএফ-এর দখলে মাত্র ২টি আসন। জিতে এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক বললেন, প্রেসিডেন্সি দেখাল ভোটের মডেল। এটাই হোক রাজ্যের মডেল। তাতে যদি আমরা পরাজিত হই, তাতে কোনও আক্ষেপ থাকবে না।

এরপর ভোট গণনা শুরু হয় পাঁচটি সেক্রেটারি পদে। সরাসরি ছাত্রদের ভোট। একটির পর একটি রাউন্ড শেষ হয়েছে আর ধীরে অথচ নিশ্চিত গতিতে এগিয়েছে বাম ছাত্ররা। ১৫ রাউন্ডের শেষে দেখা গেল এসএফআইয়ের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিতেছে ৪৭২ ভোটে, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিতেছে ৩৫৯ ভোটে, সেক্রেটারি ২৬৬ ভোটে, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জিতেছে ২৭৭ ভোটে আর গার্লস কমনরুম সেক্রেটারি ১০৪ ভোটে জিতেছে। তারপর কলেজ স্ট্রিটের রাস্তায় উড়েছে লাল আবির, মিছিল রাত দশটাতেও ছিল শব্দমুখর।

তবে প্রেসিডেন্সির ভোট কয়েকটি প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল।
এক : রাজ্যে দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী তৃণমূল ছাত্রপরিষদ। রাজ্য জুড়ে তারা কলেজের ছাত্র সংসদ দখল করে বসে আছে। তাদের প্রার্থীই নেই! কেন?

দুই : ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। বিদ্যাসাগর কলেজের ঘটনা এখনও তরতাজা। আর সেই কলকাতায় প্রেসিডেন্সির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা প্রার্থীই দিতে পারল না!

তিন : রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোট করেছে। উপ-নির্বাচন থেকে লড়াই করছে। অথচ কী আশ্চর্য, দুই বাম ছাত্র সংগঠন পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করল! বামেদের নিজেদের মধ্যেই জোট নেই, তারা যাচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে! এই সোনার পাথরবাটি মানুষকে বোঝাতে পারবেন তো!