আলিপুর কোর্টের রায়ে রাজীবের বিপদ বৃদ্ধি পেলেও স্বস্তিতে নবান্ন

0
3

আলিপুর কোর্টের রায়ে ফেরার পুলিশকর্তা রাজীব কুমারের বিপদ শতগুনে বৃদ্ধি পেলেও স্বস্তিতে নবান্ন।

এদিনের সওয়ালে রাজীবের আইনজীবী আদালতে ফৌজদারি দণ্ডবিধির 45/2 ধারার উল্লেখ করে আইনি রক্ষাকবচের বিষয়ে জোর দেন। ওই ধারায় বলা আছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কর্মরত সশস্ত্র বাহিনীর কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করতে হলে সরকারের সম্মতি প্রয়োজন। শীর্ষপদে কর্মরত IPS রাজীব কুমারের ক্ষেত্রেও সরকারের সম্মতি প্রয়োজন। রাজীবের আইনজীবী এদিন মূলত এই বিষয়টিতেই জোর দিয়ে বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের সম্মতি ছাড়া অথবা রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে কী ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন জানাতে বা গ্রেফতার করতে CBI পারেনা।

বিচারক তাঁর রায়ে রাজীব কুমারের তরফে পেশ করা এই যুক্তি সরাসরি খারিজ করে জানিয়েছেন, প্রয়োজন বোধ করলে CBI গ্রেফতার করতেই পারে রাজীব কুমারকে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের অনুমতি বা সম্মতি নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। রায়ের এই অংশ স্বস্তি দিয়েছে নবান্নকে। এ বিষয়ে রাজীবের সওয়ালকে মান্যতা দিলে রাজ্যকে নিশ্চিতভাবেই অস্বস্তিতে পড়তে হতো। সেক্ষেত্রে রাজ্য যদি রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করার অনুমতি দিতো, তাহলে রাজ্যের IPS-লবি বিরূপ হতে পারতো। আবার সম্মতি না দিলে জনমানসে রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরনও করা হতো। সেই বিব্রতকর অবস্থায় রাজ্যকে ফেলেনি আলিপুর কোর্ট। এখন এই রায়ের ভিত্তিতে CBI রাজীবকে গ্রেফতার করলে, তাতে সরাসরিভাবে নবান্নের কোনও ভূমিকাই থাকছেনা।

রাজীব কুমারকে হেফাজতে নেওয়ার প্রশ্নে CBI-এর হাত অনেকটাই শক্ত করে দিয়েছে আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, এই পুলিশকর্তাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে CBI-এর আধিকারিকরা যদি ফের নিগৃহীত হন, তাহলে দ্রুত সেই ঘটনা আদালতের নজরে আনতে পারবে এবং আদালতও সেক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।
ফলে, এই রায়ের ভিত্তিতে রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করার প্রশ্নে কার্যত আর কোনও বাধা রইল না CBI-এর সামনে।

এদিনের রায়ের মূল অংশ :
■ রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে CBI-এর গ্রেফতারি পরোয়ানার আর্জি খারিজ করেছে আলিপুর আদালত।

■ রাজীবের তরফে যে আইনি রক্ষাকবচের আবেদন করা হয়েছিলো, তা-ও খারিজ করেছেন বিচারক।

■ রাজীবের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন জানানোর সওয়ালে CBI দাউদ ইব্রাহিমের তুলনা টেনেছিলো। কোর্ট সেই সওয়াল খারিজ করে বলেছে, দাউদের সঙ্গে রাজীবকে একাসনে বসানো যায়না। করন দাউদের বিরুদ্ধে TADA ধারায় অভিযোগ আছে, যা রাজীবের বিরুদ্ধে নেই।
■ রায়ে বলা হয়েছে,
CBI-এর দাবি, রাজীব কুমারের অপরাধ ‘কগনিজিবল’। সে ক্ষেত্রে কেন CBI পরোয়ানা জারি করার অপেক্ষা করছে? তারা পরোয়ানা ছাড়াই রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করতে পারে।